স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর ||
পৈতৃক সম্পত্তি ও বসতভিটা দখল করে পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘ নয় বছর ধরে বাড়িছাড়া করে রেখেছে প্রভাবশালী আপন চাচা ও ফুফুরা এমন অভিযোগ করেছেন রংপুর নগরীর জলকর এলাকার এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবরার।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে নগরীর কামাল কাছনায় ভাড়া বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন মৃত খায়রুল আলমের একমাত্র ছেলে একে এম আজওয়াদ আবরার। তিনি দাবি করেন, তার বাবার মৃত্যুর পর থেকেই জমিজমা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে তারই আপন চাচা, যিনি একসময় সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন, এবং ফুফুরা। পরবর্তীতে দলিল জালিয়াতি ও বরাবরেই তিনি এবং তার ছেলে আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে তারা বাবার রেখে যাওয়া বিপুল পরিমাণ জমি ও পারিবারিক বসতভিটা জবরদখল করে নেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবরার বলেন,বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা আইনি সহায়তা চেয়েছি। কিন্তু তারা এতটাই প্রভাবশালী যে,আমাদের মামলা পর্যন্ত গ্রহণ করতে চায়নি থানা। বরং হুমকি-ধামকি দিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। নয় বছর ধরে আমি আর আমার মা আত্মীয়ের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
তিনি আরও জানান, জমির কাগজপত্র এখনো তাদের নামে রয়েছে, কিন্তু দখলে নেই কিছুই। চাচারা জাল কাগজপত্র তৈরি করে তাদের উচ্ছেদ করেন।
আবরারের মায়ের কণ্ঠে শোনা যায় দীর্ঘশ্বাস।
ছেলের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই। বৃদ্ধ বয়সে এই অবস্থা, কার কাছে যাবো,কোথায় দাঁড়াবো?এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী পরিবারটির দাবি, জমি উদ্ধারে তারা বারবার প্রশাসনের দারস্থ হলেও এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। বরং স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।তবে মামলা চলমান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আবরার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন,আমি কোনো দয়া চাই না। আমি শুধু আমার বাবার জমি আর বাড়িটা ফেরত চাই। দোষীদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসন বা ভূমি অফিসের কোনো মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, জমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছিল এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এলাকায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ পরিবারটি নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে: অভিযোগকারীর পিতা ছিলেন একজন সমাজসেবক এবং ভালো মনের সহজ সরল মানুষ। দখল হওয়া জমির পরিমাণ প্রায় ১.১১ শতক।
ভুয়া দলিল তৈরি করে সাব-রেজিস্ট্রার থাকা অবস্থায় আত্মীয় নিজেই নিজের পক্ষে নাম খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করেন এই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীসহ মানবাধিকারকর্মীরা।