‘আমরা একটি দরিদ্র দেশে বসবাস করি, তবুও ইচ্ছা থাকলে কীভাবে দ্রুত কাজ করা যায় তারই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।’ — এমন মন্তব্য করে রংপুরে নদী ভাঙন রোধে বাস্তবায়িত এক বৃহৎ প্রকল্পের তথ্য তুলে ধরেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
দুই দিনের সফরে রংপুরে এসে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি কাউনিয়া উপজেলার পাঞ্জরভাঙ্গা এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে বিকেলে শহরের শ্যামাসুন্দরী খাল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা জানান, নদীভাঙন রোধে অনুমোদিত বাজেট হাতে পেয়েই কাজ শুরু হয়। তবে জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় মাত্র দুই মাসের মধ্যে অনুমোদনের বাইরে গিয়েই ৪৫ কিলোমিটার নদী প্রতিরক্ষা কাজ শুরু ও শেষ করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলের জন্য একটি বড় মাইলফলক।
তিনি বলেন, “আমরা চাই না প্রতিবছর বন্যা আর নদীভাঙনে ভাটির মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠুক। সেচ সুবিধার অভাবে কৃষিও যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্যই চীনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরে আলমারীতে পড়ে থাকা একটি তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে নতুন করে হালনাগাদ ও সমৃদ্ধ করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন থেকে অনুমোদন পেলেই তা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপস্থাপন করা হবে এবং চীনের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তির পথ সুগম হবে।
তিনি আরও বলেন, “এই অঞ্চলকে রক্ষা করতে হলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই। সরকার সে পথেই এগোচ্ছে।”
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার বিস্তীর্ণ তিস্তা নদীতীরবর্তী অঞ্চল ভয়াবহ ভাঙনের শিকার হয়। পাশাপাশি সেচের পানির সংকটও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত করে। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ স্থানীয়দের আশার আলো দেখাচ্ছে।