যে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল প্রায় দুই যুগ আগে
পদ্মা সেতু, একটি স্বপ্নের নাম। তবে এখন আর সেটি স্বপ্ন নয়, বাস্তব। যে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল প্রায় দুই যুগ আগে সেটি এখন পূরণ হচ্ছে। আর ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর এর নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর ৮ বছরের মাথায় শেষ হলো। অপেক্ষার পালা শেষ, সামনে চলে এসেছে সেই শুভক্ষণ।
রাত পোহলেই আগামীকাল শনিবার উদ্বোধন হচ্ছে স্বপ্নজয়ের পদ্মা সেতুর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে দুই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করবেন। গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে পরশু রোববার ভোর ৬টা থেকে।
আগামীকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ে এখন সাজ সাজ রব। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া, শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা এলাকা ব্যানার-ফেস্টুনে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সড়কের দুই পাশে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো নিয়ন আলোয় আলোকিত হয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষের মধ্যেও এক রকম উৎসবের আমেজ বয়ে যাচ্ছে। তারা গর্বিত তাদের এলাকায় দেশের টাকায় নির্মিত সবচেয়ে বড় অবকাঠামো নির্মাণ হওয়ায়।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন, এ জন্য দুই পাড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বলা যায়, পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে। এনএসআই, এসবি, ডিবি, র্যাব-পুলিশসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সদা তৎপর রয়েছেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে একরকম ঢেলে সাজানো হয়েছে ওই এলাকাকে। মাওয়া প্রান্তে ঢাকা থেকে যাওয়ার পথে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু থেকেই রাস্তার দুই ধার সাজানো হয়েছে। বড় বড় ব্যানার ও সাইনবোর্ড শোভা পাচ্ছে। আর ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ের
একেবারে শুরু থেকে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে ওয়াল এবং আশপাশের বড় বড় বেশ কিছু ভবনে আলোকসজ্জা করতে দেখা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তে দুটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর একেবারে গোড়ায় স্থাপন করা হয়েছে একটি বড় মঞ্চ ও প্যান্ডেল। পুরো প্যান্ডেলটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। র্যাবের মহাপরিচালক এই সভাস্থলটিও পরিদর্শন করেন।
এই জায়গাটা মূলত মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুতে গাড়ি ওঠা ও নামার স্থান। এখানে সড়ক ডিভাইডারে এবং সড়কের দুই পাশে বড় বড় ব্যানার এবং সাইনবোর্ড দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
এই প্রান্তের টোল প্লাজাটিকেও শতভাগ প্রস্তুত দেখা গেল। টোল প্লাজাটি পার হলেই বেশ কয়েকটি ইলিশের ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে। শ্রমিকরা এসব ম্যুরালে শেষ সময়ের কাজগুলো সম্পন্ন করতে ব্যস্ত রয়েছেন। ইলিশের ম্যুরালটি পার হলেই চোখে পড়বে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর মূল ম্যুরালটির।
যেখানে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল আকৃতির ছবি। এখানকার শেষ সময়ের কাজগুলোও শেষ করতে শ্রমিকদের সারা দিন ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল।