প্রধান শিক্ষকের গাফলাতির ফলে দিশেহারা শিক্ষার্থীরা । কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রধানশিক্ষকের দায়িত্বে অবহেলায় ২৫ জন শিক্ষার্থীর
ভবিষ্যত শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন এসএসসি পরিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর
লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। উপজেলার খামার বজরা দক্ষিণ পাড়া ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার বজরা দক্ষিণ পাড়া ভোকেশনাল
ইনস্টিটিউটে ২০২২ সালে দুটি ট্রেডে (কম্পিউটার ও ইলেকট্রিক) ৩১ জন শিক্ষার্থীর এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা দেওয়ার কথা।
নিয়মানুযায়ী গত ১৭ মে ফরম পূরণ করে তারা। এরপর গত ২৪ মে স্কুলে গিয়ে জানতে পারে যে, ৩১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জনের ফরম পূরণ হয়নি।
বিষয়টি জানাজানি হলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এসব পরীক্ষার্থী। পরে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মেহেদী হাসানের কাছে জানতে চাইলে
এমনটা ঘটেনি বলে অস্বীকার করেন তিনি। একপর্যায়ে ওই প্রধানশিক্ষকই নিশ্চিত করেন যে তাদের ফরম পূরণ হয়নি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধানশিক্ষকের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো সুরাহা না পেয়ে গত ২৬ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী রিফাত মিয়া জানান, নবম শ্রেণিতে আমি জিপিএ ৪.৫০ পেয়ে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছি।
হেড স্যার (প্রধানশিক্ষক) ফরম পূরণের জন্য আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ হাজার করে টাকা নিয়েছেন।
কিন্ত এখন শুনতেছি আমাদের ফরম পূরণ হয়নি, আমরা পরীক্ষা দিতে পারবো না। এ অবস্থায় শুধু আমি নই, আমরা বঞ্চিতরা সবাই চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছি।
কম্পিউটার শাখার সুমি আক্তার, তাওহিদা খাতুন, ইলেকট্রিক শাখার আবু মুসা, ইদুল মিয়াসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী জানান,
প্রধানশিক্ষকের গাফিলতির কারণে আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে হেড স্যারকে বললে তিনি বলেন,
এখানে আমার করার কিছু নেই। উনি আমাদের এতগুলো জীবন হুমকির মুখে ফেলে দিলেন। ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ চান দিশেহারা এসব পরীক্ষার্থী।
তবে খামার বজরা দক্ষিণ পাড়া ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধানশিক্ষক মেহেদী হাসান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
এরা প্রত্যেকে নবম শ্রেণিতে ৩ বিষয়ের বেশি পরীক্ষায় ফেল করেছে।
তাই তাদের ফরম পূরণ হয়নি। অনেকের টাকা ফেরত দিয়েছি। যেসব পরীক্ষার্থী আসেনি তাদের টাকা বিদ্যালয়ে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, এটা কোনভাবে কাম্য নয়। দ্রুত খোঁজ নিয়ে এসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।