1. [email protected] : Live Rangpur :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রাম সীমান্তে দুই শিশুকে বিএসএফের ধাওয়া

  • Update Time : শনিবার, ২ জুলাই, ২০২২
  • ২৪৫ Time View
কুড়িগ্রাম সীমান্তে দুই শিশুকে বিএসএফের ধাওয়া
কুড়িগ্রাম সীমান্তে দুই শিশুকে বিএসএফের ধাওয়া

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিএসএফের ধাওয়ায় নদের পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে দুই শিশু। মা বাবা সাঁতড়িয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও এ রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত দুই শিশুর সন্ধান পাওয়া যায় নি।স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সীমান্তবর্তী ধাপরারহাট এলাকার মানব পাচারকারী জায়দুল ও গেদার মাধ্যমে ভারতের হরিয়ানা রাজস্থান সীমান্তের সুলতানপুর এলাকার হাসিহেসা ভাটায় কাজ শেষে ভারতে কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সেউটি সীমান্তের কাটাতারের বেড়া কাটিয়ে বাংলাদেশের রহিজ উদিন (৩৭) ও তার স্ত্রী সামিনা বেগম, ৮ বছরের শিশু সন্তান পারভিন খাতুন ও ৪ বছরের সাকেবুর হাসান ও তাদের সঙে থাকা সুলতানকে নীল কমল নদের তীরে পানিতে দাড়িয়ে রাখে।এসময় টহলে থাকা ভারতীয় বিএসএফ নদের পানিতে শব্দ শুনতে পেয়ে উচ্চস্বরে বাশিঁ বাজাতে থাকে। পরক্ষনে ভয় পেয়ে মা সামিনা বেগম গভীর পানিতে যেতে থাকলে খরস্রোত নদে ডুবিয়ে যায় শিশু সন্তান পারভিন ও সাকেবুল।এসময় বাবা রহিজ ও মা সামিনা চিৎকার শুরু করলে এপারের নাম না জানা মানব পাচারকারী তিনজন তাদের ভন্ড হিসেবে গালি গালাজ দিতে থাকে। এবং তাদেরকে দ্রুত বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।নিখোঁজ শিশুর দাদা জিয়া উদ্দিন জানান, প্রায় ১৬ বছরে আগে অভাবের তাড়নায় আমার ভাগ্না অন্যদের সাথে কাজের সন্ধানে ইটভাটায় কাজ করার জন্য দিল্লীতে যান। সেখানে কাজ করা সুবাধে ২০০৫ সালে ভারতের দিনহাটা থানার নয়ারহাট এলাকার সাজেদুল হকের মেয়ের সাথে রহিচ উদ্দিনের বিয়ে হয়।এরই মধ্যে তাদের কোলে জন্ম নেয় পারভিন ও সাকেবুল। ইদুল আযহা পালন করার জন্য ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে অবৈধ পথে বাড়ী ফেরার সময় ঘটে গেল যায় এ নির্মম ঘটনা।রহিজ উদ্দিনের বাড়ী নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুকাতী গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত একাব্বর আলী । অবুঝ শিশুদেরকে হারিয়ে শোকাহত গোটা এলাকা। শনিবার বিকালে নিখোঁজদের বাড়ীতে গেলে হারানো শিশুদেরকে ফেরত চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রহিজ উদ্দিন।রহিজ উদ্দিন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন,’সন্তানদের বয়স হলো আমার জন্ম ভূমি দেখেনি। সে জন্য ঈদ করার সুবাধে বাড়ীতে প্রথম বার নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। পরিবারের ও ছেলে মেয়েদের নতুন কাপড় চোপড় কিনে ট্রাং এ রাখা হয়েছে। নিরাপদ পথে দেশে ফেরার জন্য ভারতের দালালদের সাথে ৩০ হাজার টাকা চুক্তি করা হয়েছে। তারা আমাদেরকে সীমান্তে কোন এক বাড়ীতে নিয়ে এসে রাখেন রাতে।সেখানে আরো ২০/২৫ জন নারী পুরুষ ও শিশুও ছিল। গভীর রাতে ৯৪৩ নং মেইন পিলারের পাশে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে পার করার চেষ্টা করেন। তারা কাটাতার পার করে নদী পথে নিয়ে আসেন । সে জন্য নদীর তীরে আমাদেরকে রাখেন। এ সময় ভারতের শেউটি ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা লাইট জ্বালিয়ে দেখার পর আমাদেরকে ধাওয়া করে। এ সময় দালালরা তড়িঘরি করে নদী পার হওয়ার জন্য বলে।আমি জিনিসপত্র নিয়ে নদীর মাঝ পথে যাই। এ সময় আমার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নদীতে নামেন। কিন্তু তারা কেউই সাঁতার জানে না। স্রোতের টানে রাতের অন্ধাকারে স্ত্রীর হাত থেকে আমার সন্তানরা নিখোঁজ হয়। পানিতে ডুবে অনেক চেষ্টা ও খোঁজা খুজি করেছি। তাদের সন্ধান পাইনি। কষ্ট করে আমার স্ত্রীকে পার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। তারা বেঁচে আছে , না মারা গেছে ,তার কোন হদিস পাই নাই।শনিবার(২ জুলাই) রাত ৯ টায় লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি কাশিপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার কবির হোসেন জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার পথে দুইটি শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে উড়াও খবর পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিএসএফকে জানানো হয়েছে। তারা দুই শিশুর বিষয়ে সঠিক তথ্য জানায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © Rangpur24.com 0176414680 [email protected]