তিস্তার চরে জনপ্রিয় ঘোড়ার গাড়ি
নীলফামারীতে ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন না থাকলেও তিস্তার চরাঞ্চলে মানুষের
যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের ভরসা হয়ে উঠেছে ঘোড়ার গাড়ি।
জেলার ডিমলায় তিস্তার চরাঞ্চলে ভাড়ায় চালিত ঘোড়ার গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
অনেকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শাহের আলী।
চর এলাকায় পাঁচ বছর ধরে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শাহের আলী।
দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা আয় করেন তিনি। ঘোড়ার খাবারের জন্য
তাঁকে প্রতিদিন ব্যয় করতে হয় ১০০–৩০০ টাকা। বাকি টাকায় সংসার চালান।
শাহের আলী বলেন, অনেকেই কৃষি ও মৎস্য শিকারের পেশা
স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলে বালুর গভীরতা বেশি থাকায় অন্যান্য যানবাহন চলাচল
করতে পারে না। ফলে মালামাল পরিবহনে ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র বাহন।
সাধারণত মোটরগাড়ির পুরোনো চাকা দিয়ে ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করেন তাঁরা।
প্রতিটি গাড়ি তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫–২০ হাজার টাকা। আর একটি ঘোড়া কিনতে লাগে আরও ২৫–৩০ হাজার টাকা।
এলাকাবাসীরা জানান, শুকনো মৌসুমে তিস্তার বুকে জেগে ওঠে অসংখ্য বালুচর।
ফলে চরের বাসিন্দাদের যাতায়াত ও কৃষিপণ্যসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহনে দুর্ভোগে পড়তে হতো।
কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে ঘাড়ে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হতো। সেই দিন এখন আর নেই।
ধু ধু বালুচরে অনায়াসেই চলছে ঘোড়ার গাড়ি। বিশেষ করে ফসল পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ির বিকল্প নেই।
তারা আরও জানান, আগে খড়িবাড়ি চরে চার থেকে পাঁচটি গাড়ি ছিল। এখন বিশ থেকে ত্রিশটি গাড়ি হয়েছে।
আনন্দবাজার এলাকার কৃষিপণ্য ব্যবসায়ী বাবু ইসলাম বলেন
, তিস্তার বিভিন্ন চরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ধান, ভুট্টা, গমসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য ক্রয়–বিক্রয়ের জন্য
ঘোড়ার গাড়িতে করে হাটে নিয়ে আসেন। একইভাবে পণ্য কিনে ঘোড়ার গাড়িতে চরাঞ্চলে নিয়ে যান।
ঘোড়ার গাড়ি চালকেরা দুরত্ব অনুযায়ী পণ্যের ভাড়া নেন।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, চরাঞ্চলে নির্দিষ্ট সড়ক
না থাকায় বালু পথে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করতে বেশ বেগ পোহাতে হয় বাসিন্দাদের।
এ কারণে চরাঞ্চলে যাতায়াতের সুবিধার্থে ও পণ্য পরিবহনে ভাড়ায় চালিত ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার বেড়েছে।
দিন দিন চর এলাকায় ঘোড়ার গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। এই জনপদে জনপ্রিয় ঘোড়ার গাড়ি।