রংপুরে রোগীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। চালু হচ্ছে ৪৬০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্র। চলমান নির্মাণকাজ আগামী ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পরপরই আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং প্রয়োজনীয় জনবল পদায়নের মাধ্যমে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে।এই চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হলে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা পেতে ঢাকামুখী যাত্রার চাপ অনেকাংশে কমবে। এতে কয়েক লাখ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা।
ভবনের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামিম আখতার।শুক্রবার সকালে তিনি বহুতল ভবনের নির্মাণস্থলে পরিদর্শনে যান এবং কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন। তিনি জানান,আগামী ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই এ চিকিৎসা কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।এ সময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান,সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রংপুরে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জনবল অনেক কম। রমেক হাসপাতালের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। এ অবস্থায় নতুন এই চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হলে চিকিৎসাসেবার মান ও সুযোগ বাড়বে।
রমেক হাসপাতালের পরিচালক আরও বলেন, “বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা আছে। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের জায়গা ও অবকাঠামো সম্প্রসারণ জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুন প্রকল্প চালু হলে সেই চাপ কিছুটা লাঘব হবে।
উল্লেখ্য, দেশের উত্তরাঞ্চলে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের জন্য পৃথক ও পূর্ণাঙ্গ কোনো চিকিৎসাকেন্দ্র এতদিন ছিল না। ফলে রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বা দেশের বাইরে যেতে হতো। এতে সময়, অর্থ এবং শারীরিক কষ্ট—সব মিলিয়ে রোগীদের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ প্রকল্পটি শুধু রংপুর নয়, আশেপাশের জেলাগুলোর মানুষকেও উন্নত চিকিৎসার আওতায় আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এই কেন্দ্রটিতে থাকবে অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও সহায়ক কর্মীবাহিনী। রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা সরকারের প্রতিশ্রুত স্বাস্থ্যসেবার সমতা নিশ্চিত করার একটি বড় পদক্ষেপ। রংপুরে এই চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হওয়ায় একদিকে যেমন স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়নের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে, অন্যদিকে নাগরিকরাও পাবেন দ্রুত ও কার্যকর চিকিৎসা সেবা।