রংপুরের পীরগাছায় এক ব্যবসায়ীকে সাজানো মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। কৌশলে ওই ব্যবসায়ীকে ঢাকার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে প্রতারণার নাটক সাজিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে প্রভাবশালী একটি প্রতারক চক্র। এছাড়াও ওই চক্রটি ভূক্তোভোগি ব্যবসায়ীয় স্বাক্ষরিত ব্যাংক চেকের পাতা চুরি করে আরো মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকী দিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে ওই প্রতারক চক্রের হাত থেকে বাঁচার আবেদন জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মফিজুল হক স্থানীয় সাংবাদিকদের নিকট এ তথ্য জানায়। এসময় তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সুবিচার দাবি করেন।
পীরগাছা বাজারের স্টেশন রোডে অবস্থিত মেসার্স মিরেজ ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক ও উপজেলার অনন্তরাম (সরকারটারী) গ্রামের মৃত নজর আলীর ছেলে আলহাজ্ব মফিজুল হককে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গত এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখে ঢাকায় নিয়ে যায় প্রতারক চক্রের মূলহোতা পাশর্বর্তী গঙ্গাচড়া উপজেলার গঙ্গাচড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে মোজাফ্ফর হোসেন ও তার ২/৩ জন সহযোগী। তারা ব্যবসায়ী মফিজুল হককে নিয়ে ঢাকার গুলশান-২ এর ৬৮/এ রোডে অবস্থিত বাড়ি নম্বর- ১৫, রিরা হোটেল (আবাসিক)-এ ওঠে। ওই হোটেলের ৩০৪ নম্বর কক্ষে অবস্থান করাকালে ২৩ এপ্রিল দুপুরে মৃত্যুর ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসায়ী মফিজুল হকের নিকট থেকে জোরপূর্বক ৫/৬টি ফাঁকা নন জুডিমিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয় প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোজাফ্ফর হোসেন।
এরপর তারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে চাকুরী দেয়ার নামে প্রতারনার নাটক সাজিয়ে মফিজুল হককে পুলিশের নিকট ধরিয়ে দেয় এবং সাজানো একটি মামলা দায়ের করে। যার গুলশান মডেল থানার মামলা নং- ৩৯, তারিখ- ২৩/০৪/২০২২ইং।
প্রতারক চক্রটি ব্যবসায়ী মফিজুল হককে পুলিশের নিকট ধরিয়ে দেয়ার সময় তার কাছে থাকা একটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ওই ব্যাগের ভিতরে ব্যবসায়ী মফিজুল হকের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র, নগদ ৫৫ হাজার টাকা এবং তার মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিরেজ ইলেক্ট্রনিক্স এর ব্যাংক হিসাবের স্বাক্ষর করা ৪টি চেকের পাতা ছিল। যার চেক নম্বর সিডিবি ৬১৩২৮৮২, ৬১৩২৮৮৩, ৬১৩২৮৭৯ ও ৬১৩২৯৫৮। ওই মামলায় দীর্ঘ দিন হাজতবাসের পর ব্যবসায়ী মফিজুল হক সম্প্রতি বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও ক্ষান্ত হয়নি প্রতারক চক্রটি। তারা পুনরায় হয়রানী ও হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে ওই চেকের পাতাগুলো দিয়ে ব্যবসায়ী মফিজুল হকের নামে মামলা দায়েরের হুমকী দিয়েছে। প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোজাফ্ফর হোসেন নগদ ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে জানিয়ে দিয়েছে, তার দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিলে মফিজুল হককে চেকের মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে।
ভূক্তভোগি ব্যবসায়ী মফিজুল হক বলেন, তিনি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা মোজাফ্ফর হোসেনের ফাঁদে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সাজানো মামলার আসামী হয়ে চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন। বর্তমানে হুমকী ধামকীর মূখে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি প্রতারক চক্রের হাত থেকে বাঁচতে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রতারকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এসকল বিষয়ে জানতে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই, ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) এর পুলিশ পরিদর্শক তৈয়বুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।