আমন মৌসুমে মাত্র ৫০ হাজার টন ধান কেনার ঘোষণার প্রতিবাদ,চালের দ্বিগুণ পরিমাণ ধান ক্রয় ও আলুচাষীদের ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবিতে রংপুরে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ।
হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি ধানের দ্বিগুণ চাল কেনা,আলুচাষীদের ক্ষতিপূরণ ও সহজ শর্তে ঋন প্রদান, বিশেষায়িত সরকারি হিমাগার নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ ১৩ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠন রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে কাচারীবাজারে বিক্ষোভ সমাবেম অনুষ্ঠিত হয়েছে।সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক কমরেড আহসানুল আরেফিন তিতু,কৃষক প্রতিনিধি রানা মিয়া,আবুল হোসেন প্রমূখ।নেতৃবৃন্দ বলেন,
গত ৯ নভেম্বর ২০২৫ সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় সরকার আগামী ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান ও চাল ক্রয় করবে। আমন মৌসুমে সরকার ৩৪ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান, ৫০ টাকা কেজি দরে ৬ লক্ষ মেট্রিক টন চাল কিনবে। চালের তুলনায় সামান্য ধান কেনার এই ঘোষণার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠন।নেতৃবৃন্দ আরও বলেন- ‘এই ঘোষণার মাধ্যমে সরকার আবারও কৃষকের বদলে গুটিকয়েক চালকল মালিকের স্বার্থ দেখেছে । অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে চালের দ্বিগুন পরিমাণ ধান কেনার ঘোষণা দিতে হবে। কারণ কৃষক ধান উৎপাদন করে, চাল নয়। দীর্ঘদিন থেকে আমাদের সংগঠন দাবি জানিয়ে আসছে যে, কৃষক যাতে তার ধানের ন্যায্যমূল্য পায় সে ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। সেজন্য হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছে ধান ক্রয় করতে হবে। সরকার কখনও তা করেনি। বরং কৃষক খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে আগে আদ্রতার কথা বলে কৃষকের ধান ফেরত দেয়া হত। এখন অনলাইনের মাধ্যমে ধান নেয়ার নিয়ম করায় সাধারণ কৃষক গুদামে ধান বিক্রি করতে পারছে না। এছাড়াও সরকার প্রতি মৌসুমে ধানের যে মূল্য নির্ধারণ করে তা কৃষকের জন্য লাভজনক হয় না। সে কারণেও কৃষক সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে উৎসাহিত হয় না। এসকল কারণে প্রতি মৌসুমে সরকার নির্ধারিত ধান কিনতে পারে না। কৃষকরাও বঞ্চিত হয়। অবিলম্বে কেনার প্রক্রিয়া সহজ করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনতে হবে এবং চাল না কিনে শুধু পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান কিনে মিলারদের মাধ্যমে সরকারকে চাল তৈরি করতে হবে।’ কৃষকের স্বার্থবিরোধী এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন গতবছর আলুচাষীরা প্রচুর পরিমাণে আলু ফলিয়েছে।কিন্তু হিমাগার মালিকেরা অযৌক্তিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করায় চাষীরা হিমাগারে আলু রাখতে পারেনি।শত শত টন আলু ঘরেই পঁচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।দেশের এতবড় অপচয় সরকারের চোখের সামনে হলো অথচ সামান্য অর্থ ব্যয়ে কয়েকটা হিমাগার সরকার নির্মাণ করলো না।ফলে ঋণ নিয়ে, ধার করে আলু ফলানো চাষীরা সর্বশান্ত হয়ে গেছে।অবিলম্বে এই চাষীদের ক্ষতিপূরণ ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাই।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন যে, কৃষকের বিপদের মুহূর্তে সরকার পাশে দাঁড়ায়না।অথচ কৃষকের উপর কর আরোপ করতে সবসময় উন্মুখ হয়ে থাকে।সাম্প্রতিক সময়ে জমি বিক্রেতার উপর শতক প্রতি ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত উৎস কর আরোপ করেছে।রংপুরে এখন এমন জমি আছে যার দাম শতক প্রতি ১২/১৫ হাজার টাকা।ফলে কোন কোন ক্ষেত্রে জমির দামের চাইতেও উৎস কর বেশি।অবিলম্বে এই নিবর্তণমূলক আইন বাতিলের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।সমাবেশ শেষে এসব দাবিতে ডিসি এবং আরসি ফুড বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

Reporter Name 



















