হেমন্তের উৎসবে মাতলো পার্বতীপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা
পার্বতীপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে আজ বুধবার (৬ই ডিসেম্বর) ২০২৩ দিনব্যাপী হেমন্ত উৎসব-১৪৩০ পালিত হয়েছে। হেমন্ত উৎসবে নানা ফল ও পিঠার সমাহার নিয়ে হাজির হন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে ছিল নানা রকম মুগডালের পিঠা, নকশি পিঠা, ডোনাট পিঠা, পাতা পিঠা, ভাপা পিঠা, পাকানো পিঠা, কলা পিঠা, শামুক পিঠা, চিরুনী পিঠা, চুসি পিঠা, মুড়ির মোয়া, পাটি সাপটা পিঠা, পুলি পিঠা, সেমাই পিঠা ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীদের আয়োজনে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বীর উত্তম শহীদ মাহবুব সেনানিবাস, পার্বতীপুর, দিনাজপুর কলেজ প্রাঙ্গনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে হেমন্ত মেলার উদ্বোধন করেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোজাম্মেল হোসেন, এএফ ডব্লিউসি, পিএসসি. জি কমান্ডার, ৬৬ আর্টিলারি ব্রিগেড ও সভাপতি পরিচালনা পর্ষদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর স: ম: আব্দুস সামাদ চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল হাফেজ মো: জুনায়েদ হোসেন, বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অভিভাবকবৃনদরা। অনুষ্ঠানটি সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, এ হেমন্ত উৎসব অনুষ্ঠান দেখে আমি খুবই আপ্লুত। তিনি আরও বলেন, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশোনাই করবে এমনটা নয়, পড়াশোনার বাইরেও তাদের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকক্টিভিটিসে তাদের অংশগ্রহণ থাকবে এবং এই স্কুল ও কলেজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে এই প্রত্যাশায় করি।
হেমন্তে বাংলার প্রকৃতি এক নতুন রুপে আবিভূত হয়। একদিকে কুয়াশামাখা শীত অন্যদিকে নতুন ধান আর খেজুর রসে গ্রাম-বাংলায় উৎসব-আমেজের ধুম পড়ে।যদিও এখন কালের বিবর্তনে সেসবের অনেক কিছু হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে সেই সাংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বীর উত্তম শহীদ মাহবুব সেনানিবাসের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করে হেমন্তের উৎসব ।
এই উৎসবকে ঘিরে আয়োজিত ফল ও পিঠা উৎসবে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশ নেয় স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। কলেজ প্রাঙ্গনে আয়োজিত এই উৎসবে গিয়ে দেখা যায়,ওকি হায়রে হায় মনটা মোর পিঠা খাবার চায়, প্রানে পিঠা পুলি, ফুলের গন্ধে মন আনন্দে, চলো হারাই, হেমন্তের গন্ধে, হিম হিম শতের বাতাসে মন ভোলানো পুলির স্বাদে হেমন্তের বাতাসে পিঠা পিঠা ভাব আসে, এমন নানান বাহারি নামে প্রায় ২৮ টির অধিক ষ্টলে বিভিন্ন ধরনের পিঠার সমাহার নিয়ে স্টল বসেছে। প্রায় স্টলগুলোতে ছিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠার সমাহার।
হেমন্ত উৎসবের এই আয়োজনের বিষয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ষ্টলের শিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী স্বপন বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থী বাঙালির সংস্কৃতি ধারণ করে হেমন্ত উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এই ষ্টলে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ফলের ডালা সাজিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফল রেখেছে এবং ফলগুলো সম্পর্কে ব্যানারে শ্লোগানে কলার বিষয়ে লিখেছে কাঁচায় সব্জি পাকলে ফল দুই ভাবে যায় খাওয়া, পুষ্টি গুনে ফলটি ভরা বছর জুড়ে যায় পাওয়া। আম সম্পর্কে লিখেছে আম হলো ফলের রাজা দেশের সেরা ফলও, টক মিষ্টি এই ফলটি সব চাইতে রসালো। প্রধান অতিথি হেমন্ত উৎসব উদ্বোধনের পর সকল ষ্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। এছাড়াও নাগরদোলা, যাদুকরের যাদুকর অনুষ্ঠানে আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।