হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে লাভজনক দামে খোদ কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টন ক্রয়, উন্নয়ন বাজেটের ৪০ ভাগ কৃষিখাতে বরাদ্দ্,ক্ষেতমজুরদের সারাবছর কাজের নিশ্চয়তার দাবিতে কৃষক সংগ্রাম ও ক্ষেতজুর সংগ্রাম পরিষদ রংপুর এর উদ্যোগে মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালিত।
গতকাল ২৯ এপ্রিল ২০২৫ সকাল ১১ টায় হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে লাভজনক দামে খোদ কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টন ক্রয়, উন্নয়ন বাজেটের ৪০ ভাগ কৃষিখাতে বরাদ্দ্,ক্ষেতমজুরদের সারাবছর কাজের নিশ্চয়তার দাবিতে কৃষক ও ক্ষেতজুর সংগ্রাম পরিষদ রংপুর এর উদ্যোগে মিছিল, সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালিত।
শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে কাচারীবাজারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি রংপুর জেলার সভাপতি আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রবীন রাজনীতিক শাহাদাত হোসেন,সমাজতান্ত্রিক কৃষক ও ক্ষেতমজুর ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস,বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু, কৃষক সমিতির রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন,কৃষক ফ্রন্টের রপুর জেলার সদস্যসচিব মমিনুল ইসলাম প্রমূখ। নেতৃবৃন্দ বলেন গত ৯ এপ্রিল সরকার এবছর বোরো মৌসুমে ধান চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে ৩ লক্ষ মেট্রিক টন ধান ও ১৪ লক্ষ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। 'সরকারের এ ঘোষণা বরাবরের মতো চালকল মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করবে। প্রতিবছরই সরকার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা কম রাখে, চাল কেনে বেশি। এবছর ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা গতবছরের তুলনায় আরও ২ লক্ষ মেট্রিক টন কম। এছাড়াও প্রতিবছর দেখা যায় মৌসুম শেষে সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চাল শতভাগ কিনলেও ধান কিনতে পারে ৫০ শতাংশ বা তারও কম। অথচ কৃষক ধান বিক্রি করতে পারে চাল নয়। সরকারের ধান কেনার সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি থেকে এ কথা অনস্বীকার্য যে তারা কৃষক নয় চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের স্বার্থই রক্ষা করেন। ফলে মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কম মূল্যে ধান বিক্রি করতে বাধ্য করে। সেক্ষেত্রে সরকারি সংগ্রহের পুরোটাই সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ধান কেনার মাধ্যমে সিন্ডিকেট ভাঙ্গা সম্ভব। সরকার যতটুকু ধান কেনে সেটাও নানা জটিলতার (যেমন- নির্ধারিত আদ্রতা, কৃষি কার্ড ও অ্যাপস ব্যবহার ইত্যাদি) কারণে সরাসরি কৃষক বিক্রি করতে পারে না। অবিলম্বে এসকল জটিলতা দুর করে হাটে হাটে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে হবে এবং মিলারদের সাথে চুক্তি করে সেই ধান থেকে চাল করতে হবে। এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিবছর পর্যায়ক্রমে ৫০ লক্ষ টন ধান কিনতে হবে। সরকার পর্যাপ্ত ধান কেনার উদ্যোগ না নিলে কৃষক কখনও তার ন্যায্য মূল্য পাবে না।
এছাড়া সরকার ধানের মূল্য নির্ধারণ করলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন ভুমিকা রাখে না। ফলে কৃষক ধান বিক্রি করে প্রতিবছর সর্বশান্ত হয়। কোন সরকারই কৃষকদের পক্ষে কোন ভুমিকা রাখে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারও একই পথে হাঁটছে, এটা দুঃখজনক। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন দেশ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হওয়া উচিত কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করা। কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে নিম্নোক্ত দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাই।
১. ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগে হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ৫০ লক্ষ টন ধান ক্রয় কর।
২. দুর্নীতি- স্বজনপ্রীতি বন্ধ করে গোডাউনে ধান ক্রয়ের জটিলতা (আদ্রতা পরিমাপ, কৃষি কার্ড দিয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে ধান ক্রয়) দুর কর।
৩. হাটে হাটে ধলতা প্রথার নামে অতিরিক্ত ফসল আদায় বন্ধ কর।