নর্থ ক্যানভাস বাংলাদেশ এর উদ্যোগে মহান শহীদ দিবসে জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনের আর্ট গ্যালারীতে ৩ দিন ব্যাপী রংপুর বিভাগীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডঃ শওকাত আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী প্রফেসর আলাউদ্দিন আহমেদ, বিভাগীয় চারুকলা প্রদর্শনী উদযাপন পর্ষদ এর উপদেষ্টা চৌধুরী মাহমুদুন্নবী ডলার। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পর্ষদের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর কবির, এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ, চিত্রশিল্পী মিজানুর রহমান মিসু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় চারুকলা প্রদর্শনী উদযাপন পর্ষদ এর আহবায়ক চিত্রশিল্পী আহসান আহমেদ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডঃ শওকাত আলী প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে বলেন, বিশ্ব শিল্পকলার অনন্য মাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো চারুশিল্প। কেননা শিল্পকলা শুধু মানবসত্ত্বার গভীর অনুভূতির প্রকাশ করে না বা এটি শুধু রং ও আকৃতির খেলা নয়,বরং এটি মানবজীবনের চিন্তা, সংস্কৃতি ও সময়েরও প্রতিফলনও ঘটায়। একইসাথে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী প্রফেসর আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, মানুষের রুচিশীলতা এবং সৌন্দর্যবোধ জাগাতে চারুকলা শিল্পের বিকাশ জরুরী। আর চারুকলা বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ পথ হচ্ছে জনগণের সাথে শিল্পকলার সংযোগ স্থাপন করা। আর শিল্পকলা প্রদর্শনী সেই কাজটি করে থাকে। সভাপতির বক্তব্যে চিত্রশিল্পী আহসান আহমেদ বলেন,রংপুর বাংলাদেশের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ একটি জেলা। আমাদের অঞ্চলের নিজস্ব সংগীত, নাটক,নৃত্য, গান,গল্প,কবিতা রয়েছে। যা রংপুরকে বিশ্ববাসীর কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছে। শিল্পীরা রং তুলিতে স্বৈরাচারী শাসনের হিংস্ররুপ,জনগণের মুক্তির লড়াই এবং সম্ভাবনার বাংলাদেশের নৈসর্গিক চিত্র অংকন করেছে তাদের ক্যানভাসে। আমরা চাই দেশব্যাপী এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন হোক। প্রদর্শনীতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলার ৫২ জন শিল্পীর চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। এদের মধ্যে সিলেট থেকে শিল্পী জিয়াউল হক, এম এ আহাদ পলাশ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পী সামিয়া রহমান সন্ধ্যা, ঋতু প্রমাণিক, ভাস্কর তানভীর আহমেদ জয়, চট্টগ্রামের সৌমেন চৌধুরী, হাবীব উল্লাহ বাহার,ঢাকার শিল্পী মেহেদী হাসান,রওশন নীলা,ইমন আলী, মৌ ,বগুড়া আর্ট কলেজের সাঈদ মালিথা, গাজী আশা উল্লেখযোগ্য। ড্রইং,স্কেচ,প্রেইন্টিং,ভাস্কর্য, ক্যালিগ্রাফি, ইন্সটলেশন আর্ট, ডিজিটাল আর্ট ইত্যাদির মাধ্যমে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের নানা ঘটনা প্রবাহের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বৈচিত্রপূর্ণ এবং ভিন্নমাত্রার এই আয়োজনের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উপচে পড়া ভীড় ছিল লক্ষনীয়। ২১ ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবসে শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বেলা ১২ টা থেকে রাত ৯ পর্যন্ত প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।