ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে শীত বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতি বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবুজ পাতার ফাঁকে এখন আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি। দিনাজপুর জেলার চারপাশ জুড়েই মুকুলের ম ম গন্ধ। আর বাগান চাষিরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছে গাছের পরিচর্যায়।
জেলার ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা যায়, ফাল্গুনের শুরুতেই পরিবর্তন শুরু হয়েছে প্রকৃতির। গাছের পুরনো পাতা ঝরে বের হচ্ছে নতুন পাতা। আর সেই পাতার ফাঁকে বেরিয়ে আসছে আম, লিচু, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের মুকুল।
হাকিমপুর উপজেলার মংলা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমার বাড়িতে একটা ফজলি ও একটি ন্যাংড়া জাতের আম গাছ আছে। গাছ দুটির বয়স প্রায় ১২-১৩ বছর হবে। প্রতি বছর পর্যাপ্ত পরিমাণ আম ধরে। এবারও গাছ দুটিতে প্রচুর মুকুল এসেছে। আল্লাহ দিলে যদি ঝড়-বৃষ্টি না হয়, তাহলে অনেক আম পাবো।”
ঘোড়াঘাট উপজেলার উসমানপুরের বাগান চাষি রশিদুল ইসলাম বলেন, “আমার দেড় বিঘা জমির উপর একটা আম বাগান করেছি। বাগানে ফজলি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, নাগ ফজলিসহ কয়েক জাতের আমের গাছ আছে। বাগানের বয়স ৬ বছর, প্রতিটি গাছ কলম করা, তাই ছোট থেকেই আম ধরেছে। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও আমের ভালো ফলন পাব।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. আরজেনা বেগম জানান, চলতি আম মৌসুমে এবার উপজেলায় ৪৭ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। বাগানের সংখ্যা ১৪৫টি। এছাড়াও উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে আমের গাছ রয়েছে। প্রায় গাছে আমের মুকুল এসেছে। আমরা বাগান চাষিসহ বসতবাড়িতে থাকা আম গাছ মালিকদের সেবা দিয়ে আসছি। এছাড়াও গাছের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া শুরু করেছি। দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো, নুরুজ্জামান বলেন, “জেলায় চলতি আমের মৌসুমে ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। আম চাষিদের যাতে আমের ভাল ফলন হয় সেই জন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে তাদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আম চাষিরা ভাল ফলন পাবেন।