সাংবাদিকতা কেবল একটি পেশা নয়, বরং এটি এক গভীর দায়বদ্ধতা ও সমাজের প্রতি প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতির পথ ধরে কাজ করে গেছেন এখন টেলিভিশনের রাজশাহী ব্যুরোর রিপোর্টার মাসুমা ইসলাম। দুঃসংবাদ হলো, তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।মাসুমা ইসলাম ছিলেন একনিষ্ঠ ও পরিশ্রমী সাংবাদিক। গণমাধ্যমের প্রতি তার অবিচল ভালোবাসা ও নিষ্ঠা ছিল অনুকরণীয়। রাজশাহীতে তিনি ছিলেন সংবাদ সংগ্রহের অগ্রভাগে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কষ্টের কথা, উন্নয়ন ও বঞ্চনার চিত্র তার প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরতেন তিনি।গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। প্রথমে তাকে কুমিল্লা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয় তাকে। জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি, কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে আজ সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।পরে তার মরদেহ প্রথমে রাজধানীর বাবর রোডে মারকাজুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে গোসল শেষে সকাল সাড়ে দশটায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাকে তার জন্মভূমি নাটোরের গুরুদাসপুরে নেওয়া হবে, যেখানে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।মাসুমা ইসলামের অকালপ্রয়াণে রাজশাহী সাংবাদিক মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সহকর্মীরা বলছেন, তিনি ছিলেন নির্ভীক, নিষ্ঠাবান ও মানবিক সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার প্রয়াণ গণমাধ্যমের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।একজন প্রতিশ্রুতিশীল ও সাহসী সাংবাদিকের চলে যাওয়া গণমাধ্যম জগতে এক শূন্যতা তৈরি করল। তার কর্ম, আদর্শ ও নিষ্ঠা ভবিষ্যৎ সাংবাদিকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। মৃত্যুর পরও তিনি বেঁচে থাকবেন তার কাজের মাধ্যমে।