রাজারহাটে ৪ বছরেও শেষ হয়নি ব্রীজ নির্মাণ
দীর্ঘ ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি কুড়িগ্রামের রাজারহাটের চাকিরপশার ইউনিয়নের বালাটারী গ্রামে পৌনে এক কোটি টাকা ব্যয়ে মরা তিস্তার উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ কাজ। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আশেপাশের ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। বুধবার(১৫জানুয়ারী) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রীজের এক প্রান্তে কাঁচা সড়ক। অপর প্রান্তে কাঠের তৈরি সাঁকো। এ ব্রীজের উপর দিয়েই প্রতিদিন কয়েক গ্রামের শিক্ষার্থীসহ মানুষ যাতায়াত করে। অথচ বাইসাইকেল নিয়ে ওঠা যায় না ব্রীজটিতে। ব্রীজটি চলাচলের সড়ক থেকে অনেক উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের বালাটারী থেকে মানাবাড়ী কালিরহাট মরা তিস্তা বিলের ওপর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যে ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য শিডিউল চাওয়া হয়। ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির কাজ পায় কুড়িগ্রামের মেসার্স শিতল কনস্ট্রাকশন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৪ বছরেও শেষ করতে পারেনি। ফলে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন অসমাপ্ত ব্রীজটি সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ব্রীজটিতের দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক নেই। মিস্ত্রিরা কাঠদিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করে কাজ করছিল। এখন সেই সাঁকো দিয়েই চলাচল করছে গ্রামবাসীরা।
বালাটারী এলাকার আব্দুল বারী বলেন, এটা সেতু নয়, যেন মরণ ফাঁদ, দেখতে পাহাড়ি সিঁড়ি। সেতুর ওপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে অনেকেই ভয় পায়। সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়। বৃষ্টির সময় সিঁড়িগুলো আরও পিচ্ছিল থাকে। পা ফসকে পড়ে গেলেই মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুর দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বালাটারী গ্রামের ব্রীজের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার চার বছর চলছে। এখন পর্যন্ত ৪০% কাজও শেষ হয় নাই। কবে আমাদের ব্রীজ হবে? এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। চাকিরপশার ও নাজিমখান এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নসহ আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের পথ এই বিলের উপর দিয়ে। তাদেরকে প্রতিনিয়ত দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুধু কি তাই ? পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষি পণ্য বিভিন্ন বাজারে নিয়ে কেনাবেচা করতে পারছেন না। এখন যে অবস্থা ব্রীজের কাজ আদৌ হবে কি না বা মৃত্যু আগে দেখতে পাবো কিনা তাও ভাববার বিষয়।
শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, গ্রামের মানুষ চরম দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে বিলের পাশ দিয়ে অস্থায়ী সড়ক তৈরি করে চলাচল করছে। বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা নিরুপায় হয়ে কষ্ট করে চলাচল করছি। আমাদের এই ব্রীজটি দ্রুত নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, রাজারহাট উপজেলায় আসার আগেই ব্রীজের কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ব্রীজটি নির্মাণে অতিরিক্ত সময় লাগছে। তবে ব্রীজটির কাজ চলমান আছে। এ বছরেই ব্রীজের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।