৬ বছরেও শেষ হয়নি খানসামায় সেতুর নির্মাণ কাজ
জনগণের ভোগান্তি দূর করতে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের গোয়ালডিহি গ্রামে সাঁকোরপাড় নামক স্থানে ইছামতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয় অন্তত ৬ বছর আগে। এ সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি আজও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতিসহ বিভিন্ন অজুহাতে অন্তত ২ বছর সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন ঠিকাদার। এজন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের পুর্বে তড়িঘড়ি করে উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের গোয়ালডিহি গ্রামে সাঁকোরপাড় নামক স্থানে ইছামতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন সেতুর নির্মাণ কাজও শুরু হয়। নির্বাচন পেরিয়ে গেলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০২১ সালের জুন মাসে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন অজুহাতে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকে। দীর্ঘ সময়েও সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। বিষয়টি বিবেচনা করে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছেন গোয়ালডিহি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন লিটন। এ সাঁকো দিয়েই মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকশাভ্যান ছাড়া কিছুই পারাপার হতে পারে না। সাধারণ কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন এবং রোগী নিয়ে বিপাকে পড়েন স্বজনরা। বিকল্প পথে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এতে খরচ ও সময় দুটোই বেশি হয়।
স্থানীয়রা জানান, সেতুর দুই পারে গোয়ালডিহি, নলবাড়ি, দুবলিয়া, পূর্ব হাশিমপুর, পশ্চিম হাশিমপুর গ্রামের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। এ রাস্তা ব্যবহার করে উত্তরা ও ট্রিলিয়ন ইপিজেডকর্মী, তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা সেবাগ্রহীতারা। এসব এলাকার লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ পথ দিয়ে যাতায়াত করেন। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলার পাকেরহাট, নীলফামারীর সৈয়দপুর, চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরহাট ও সুইহারীবাজারে যান এ রাস্তা দিয়ে। বর্ষা মৌসুমে শিশুদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতসহ সকলের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পায়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সেতুটি নির্মাণ কাজ শুরু করে স্থানীয় ঠিকাদার এম এহতেশামুল হক। পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। বেশ কয়েক বছর সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার পর স্বল্প পরিসরে আবারও কাজ শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা চলছে মন্থরগতিতে। যোগাযোগের চেষ্টা করেও এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ঠিকাদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কর্মকর্তা শাহ মো. ওবায়দুর রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা বলে পাইলিং কাজ শেষ করে কয়েক বছর কাজ বন্ধ করে রেখেছিলেন। তখন সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে লিখিতভাবে জানানো হয়। এরপর আবাও ঠিকাদার সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।