নতুন বইয়ে তিন নেতার সঙ্গে শেখ মুজিব, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া
২ জানুয়ারী ২০২৫, দুপুর ১০:১৩ সময়
নতুন বইয়ে তিন নেতার সঙ্গে শেখ মুজিব, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া
নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থী নতুন বই হাতে না পেলেও সব বইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করা হয়েছে। বইয়ে ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অধ্যায়ে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলা বইয়ে যুক্ত করা হয়েছে নতুন গল্প-কবিতা।একই সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের গল্প।সেখানে উঠে এসেছে আবু সাঈদ ও মুগ্ধদের অবদান। গণ-অভ্যুত্থানের গ্রাফিতিও পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করা হয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবইয়ে ‘আমাদের চার নেতা’ নামে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। এতে চার নেতা হিসেবে স্থান পেয়েছেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তাঁদের ছবিসহ প্রত্যেকের সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। গত বছর ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ে থাকা ‘আমাদের জাতির পিতা’ অধ্যায়টি এবারের পাঠ্যবইয়ে নেই।
পাঠ্যবইয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা
নতুন পাঠ্যবইয়ে স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি নতুনভাবে রাখা হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির নতুন এই বইয়ে একই অধ্যায়ের ‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা’ শীর্ষক লেখায় বলা হয়েছে, ‘২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এরপর তিনি ২৭শে মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।আগের বইয়ে বলা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
ইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের গল্প
পাঠ্যবইয়ে এবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে গল্প-কবিতা ও প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। তবে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ের একটি গল্পে শহীদের নাম ভুল লেখা হয়েছে। ‘নাহিয়ান’ নামের একজনের কথা উল্লেখ থাকলেও এই নামে কোনো শহীদের তথ্য পাওয়া যায়নি। সমালোচনার মুখে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সনে পরিবর্তন এনেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। নাহিয়ানের স্থলে লেখা হয়েছে ‘নাফিসা’ নাম।
পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ নামে একটি গল্প রাখা হয়েছে। সেখানে শহীদ তিতুমীর, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ভাষাসৈনিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের নাম রাখা হয়েছে। রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠদের নামও। গল্পের শেষে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের নাম ও অবদান তুলে ধরা হয়েছে।
গল্পের শেষাংশে লেখা হয়েছে, ‘অধিকারের দাবি ও বৈষম্যের কথা বলতে গিয়ে এ দেশের শিক্ষার্থীরা ২০২৪ সালে আবার রাস্তায় নামে। সরকারি বাহিনী নির্মমভাবে সেই আন্দোলন দমন করতে চায়। পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রংপুরে ছাত্রনেতা আবু সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ান। পুলিশ তাঁকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এতে আন্দোলন সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিশাল এক গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।’
জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি পাঠ্যবইয়ে
বিনা মূল্যের পাঠ্যবইয়ে এবার যুক্ত হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি বা দেয়ালে আঁকা ছবি। এত দিন ধরে পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে থাকা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ও তাঁর উদ্ধৃতি বাদ দেওয়া হয়েছে।