নীলফামারীতে কমছে তিস্তার চোখ রাঙানো
নীলফামারীতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে তিস্তা। গত দুই দিন ধরে নদীর পরনি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে। এমন স্বাভাবিকতায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত পরিবারগুলো ফিরেছে নিজ নিজ বাড়িতে। আজ শুক্রবার বিকেল তিনটায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেণ্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সেখানে পানি প্রবাহ ছিল বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার নিচে। পয়েণ্টটিতে পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেণ্টিমিটার।
গত ২০ জুন ওই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩১ সেণ্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে নদী বেষ্টিত ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ও শৌলমারী ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের আট সহস্রাধিক পরিবার। সে পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে ২১ জুন রাত পর্যন্ত। ২২ জুন সকাল থেকে দফায় দফায় পানি কমতে শুরু করলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। এরপর বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত পরিবারগুলো ফিরতে শুরু করে বাড়িতে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত স্থানীয়রা শঙ্কায় ছিলেন নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের। কিন্তু শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ভাঙনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে শুক্রবার সকালে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার বিস্তার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শণ করেছেন বলে জানান পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন। ইউপি চেয়ারম্যান বলেন,‘বন্যায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত পরিবারগুলো শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত নিজ বাড়িতে ফিলে গেছে। ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৫০০ পরিবার। স্থানীয় সংসদ সদস্য এলাকা পরিদর্শণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করেছেন। ’
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন,‘গত দুই দিন ধরে নদীর গতি স্বাভাবিক আছে। এতে করে স্বস্তি ফিরেছে এলাকায়। তবে ফের পানি বৃদ্ধির শঙ্কা কাটছে না মানুষের মধ্যে। ’
পাউবো সূত্রমতে, গত ১২ জুন থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে বাড়া-কমা করছিল। গত ১৭ জুন সকাল ছয়টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ২০ জুন বিকেল ৩টায় সেখানে ৩১ সেণ্টিমিটার উপরে উছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন,‘গত দুই দিন ধরে তিস্তা নদীর গতি স্বাভাবিক আছে। ব্যারাজের সব কটি (৪৪) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন ‘তিস্তা নদীর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই হাজার ৭৫০ পরিবারের মাঝে ২৫ মেট্রিক টন চাল ও ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।