সারা বিশ্বে যখন প্লাস্টিক পণ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে পরিবেশবাদীরা ঠিক তখনই প্লাস্টিক পাত্রের বিকল্প হিসেবে হোগলাপাতা দিয়ে বিভিন্ন আকারের মজবুত বাসকেট, ঝুড়ি, ব্যাগ, সবজি বহনের খাঁচা ইত্যাদি পণ্য তৈরী করে বিদেশে রপ্তানী করছেন গাইবান্ধার উদ্যামী যুবক সবুজ মিয়া। এতে একদিকে যেমন নিজে স্বাবলম্বী হয়েছেন, অন্যদিকে তেমনি অনেক বেকার যুবক ও যুব মহিলার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছেন।
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী কুটিপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ মিয়া দীর্ঘদিন ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানীতে শ্রমিকের কাজ করেছেন। এক সময় গ্রামে এসে স্থানীয় পাকুরিয়া মাঠ এলাকায় হোগলাপাতা দিয়ে নান্দনিক, মজবুত এবং টেকসই বাসকেট, ঝুড়ি, ব্যাগ, সবজি রাখার ডালা, খাঁচা, পাপস সহ নানা ধরনের জিনিস তৈরীর কাজ শুরু করেন। ক্রমান্বয়ে তিনি গ্রামের বহু বেকার যুবক এবং মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কারিগর তৈরী করেছেন। এখন তার অধীনে কাজ করেন প্রায় ১২০জন শ্রমিক।
এই কাজে সম্পৃক্ত হয়ে অনায়াসেই নিজের পরিবারের সকল ধরণের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে পেরে খুশি এখানকার কর্মরত কারিগররা। সবুজ মিয়ার প্রতিষ্ঠিত এই কুটির শিল্পকে আরও বড় আকারে বিস্তৃত করা হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে মনে করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।মান সম্পন্ন এই বাসকেট তৈরী করে নিজের এবং গ্রামের বহু বেকার যুবক এবং যুব মহিলার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পেরে গর্বিত উদ্যোক্তা সবুজ মিয়া। তিনি মনে করেন গ্রামে এই কাজের বিস্তৃতি ঘটানো গেলে ঢাকামূখী শ্রমিকের কমে আসবে। এ কাজের পরিধি আরও বৃহৎ আকারে করতে পারলে আরও বহু বেকার যুবকের কর্মস্থংস্থান হবে। বেকারত্ব দূর হবে এবং স্বাবলম্বী হবে মানুষ।
তবে এই শিল্পকে আরও সহায়তা দিতে সব ঋণ থেকে শুরু করে সব ধরণের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিসিকের গাইবান্ধার সহকারী মহা ব্যবস্থাপক রবীন চন্দ্র রায়। তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হোগলা পাতা উৎপাদিত হয়। এই হোগলাপাতা দিয়ে গাইবান্ধার যুবক সবুজ মিয়া যেসব সামগ্রী তৈরী করছেন তা অনেক সুন্দর এবং মজবুত। এই পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো গেলে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার অনেকাংশে কমে আসবে।সবুজ মিয়ার প্রতিষ্ঠিত এই কুটির শিল্পকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হলে আরও বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন সচেতন মানুষ।