রংপুরে স্বামীর ছোড়া এসিডে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু

৭ জানুয়ারী ২০২৫, রাত ৯:৪৭ সময়
Share Tweet Pin it

রংপুরে স্বামীর ছোড়া এসিডে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় স্বামীর ছোড়া অ্যাসিডে দগ্ধের কয়েকদিন পর মারুফা আক্তার নিশি (২৫) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সদর ইউনিয়নের চেংমারী চওরাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিশি চেংমারী চওরাপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার (৩২) স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানায়, বিয়ের পর মাদক চোরাচালান, জ্বাল টাকা এবং বহিরাগত নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন রুবেল।

তার স্ত্রী এসব কাজে বাধা দেওয়ায় তার ওপরে অমানুষিক নির্যাতন করেন তিনি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মাঝে মধ্যে রাগ করে বাবার বাসায় চলে যান নিশি। রুবেলের ভয়ে আশপাশের কেউ তার বাসায় আসতো না। রুবেলের মা-বাবা প্রতিবাদ করলে তাদেরও মারধর করতেন রুবেল।গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর রাতে রুবেল তার স্ত্রী নিশির গায়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। নিশিকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায় রুবেলের পরিবারের লোকজন। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এ পাঠানো হয়। অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হলে ৪ জানুয়ারি নিশিকে হাসপাতাল থেকে না জানিয়ে নিয়ে আসে রুবেল ও তার পরিবারের লোকজন

মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে রুবেলের বাড়িতে নিশির মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই ধামাচাপা দিতে রুবেলের ঘরে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে তার স্ত্রী আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেন রুবেল।

বিচার চেয়ে নিশির বাবা মোহাম্মাদ আলী জানান, 'সোমবার আমি ও আমার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নেন রুবেলের চাচাতো ভাই ফুল মিয়া। আমাদেরকে বলেছিলেন, নিশির নাকি একটা বড় ধরনের অপারেশন করাতে হবে।

আজকে সকালে শুনছি, মেয়ে মারা গেছে।' 

 

রুবেলের বোন রেজওয়ানা বেগম (৩৫) বলেন, 'ভাবি সোমবার রাত ১০টায় নিজের গায়ে নিজেই আগুন লাগায়। সাড়ে ১০টায় আমরা হাসপাতালে ভর্তি করাই। চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় নিয়ে যাই।'

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, লাশটির সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।