গণহত্যার বিচার করাই আমার প্রধান দায়িত্ব: আইন উপদেষ্টা
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, দুপুর ১:২১ সময়
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমার প্রধানতম দায়িত্ব হচ্ছে এই গণহত্যার বিচার করা। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমার প্রধান কাজ গণহত্যার বিচার করা।শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দের বক্তব্যের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ গুম-খুন থেকে জুলাই গণহত্যা: বিচারের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। গণহত্যা বিচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি যখন সরকারে ছিলাম না, তখন আমিও বলতাম, এটা হচ্ছে না কেন, ওটা হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নগুলো থাকা উচিত। থাকলে আমরা উত্তরটা পাই। আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমার প্রধানতম দায়িত্ব হচ্ছে এই গণহত্যার বিচার করা। কিন্তু বিচারটা করার সময় আমাকে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় করতে হবে।আইন উপদেষ্টা বলেন, সবার মনে হতে পারে বিচারটা এতো দেরি হচ্ছে কেন? আমি আমার চিফ প্রসিকিউটরকে বললাম, বিচারে দেরি হচ্ছে কেন? তাজুল আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলছে, কোথায় দেরি হচ্ছে? আমি বললাম, শুনানির জন্য যে এক মাস সময় দিল? এখানে তো ৩ মাস সময় দেয়ার কথা, এর আগে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের যে বিচার হচ্ছিলো সেখানে তো ৩ মাস সময় দেয়া হয়েছিল। সেখানে এক মাস দিয়েছি।তিনি বলেন, অনেকে দেখি বলে, যাদের হাজির করা হচ্ছে তাদের হাতে হাত কড়া নেই, হাসিখুশি মুখে হাজির হচ্ছে। তখন তাজুল আমাকে বলে, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদেরও কারও হাত কড়া পড়ানো হয়নি। সে তো জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আইনজীবী ছিল। অনেক জিনিস হয় কিন্তু আমাদের স্মরণে থাকে না, আমরা ইম্পেশেন্ট (অধৈর্য) হয়ে যাই। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে দুই বছর সময় লেগেছিল জামায়াত নেতার এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, কিছুই রেডি ছিল না। বিচার যে ভবনে হবে, সেই ভবন রেডি ছিল না, বিচারক ছিল না, প্রসিকিউটর টিম ছিল না, ইনভেস্টিগেশন টিম রেডি ছিল না, শুন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পরে ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রসিকিউটর টিম করা হয়েছে। এর চেয়ে দ্রুত কি করা যায়? সাত দিনের মধ্যে বলেছিলাম, জুলাই-আগস্টের মিথ্যা মামলা সাত দিনের মধ্যে উইথড্র করা হবে। সেখানে ১০ দিন লেগেছে।আপনারা জানেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রচুর টাকা আছে, লবিং ক্যাপাসিটি আছে, শত্রু ভাবাপন্ন দেশ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই এমনভাবে বিচার করতে হবে যা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠতে না পারে। প্রশ্ন তারা তুলবেই কিন্তু প্রশ্নটা যেন কোনভাবে যৌক্তিক না হয় সে চেষ্টাটা করতে হবে। আমাদের ডিউ প্রসেস রাখতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের যে প্রসিকিউটর টিম আছে, ইনভেস্টিগেশন টিম আছে, সেখানে আমার আস্থা আছে। তিনি আরও বলেন, সারাক্ষণ আমার মনে হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তিনটা লক্ষ আছে, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। বিচারটা মূলত আমাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, এখানে কোন রকম কোন গাফিলতি হচ্ছে না, হবে না।