রাজারহাট-আনন্দবাজার সড়কের কাজ বন্ধ

২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, বিকাল ৬:২৬ সময়
Share Tweet Pin it

কুড়িগ্রামের রাজারহাট-আনন্দবাজার সড়ক পাকাকরণের কাজ শুরুর দুই মাসের মধ্যেই ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদার। কাজের প্রথমেই সড়কের ধার কেটে বড় গর্ত করে রেখেছে। আবার সড়কের কিছু অংশ খোয়া উল্টে দিয়েছে। পুরো সড়কটির মাঝখান গর্তে গর্তে ভরে গেছে। এর ফলে ২০টি গ্রামের ৪০ হাজার মানুষের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একাধিকবার প্রকল্পটি বিক্রি করায় ঠিকাদারের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা প্রকৌশী ডিজাইন ও জয়েন্ট মোতাবেক কাজ করার তাগিদ দেয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ করেছে বলে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ দাবী করেছে। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রুরাল কানেকটিভিটি ইমগ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (আরসিআইপি) অধীনে কাজটি বাস্তবায়নের জন্য ২০২৩ সালে ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ১০টাকা চুক্তি সম্পন্ন হয়। কাজটি পান রংপুরের ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা। ওই ঠিকাদার কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর রনি নামের এক সাব-ঠিকাদারের কাছে প্রকল্পটি বিক্রি করেন। তিনি আবার আবুশামা নামের আরেক এক সাব-ঠিকাদারের কাছে প্রকল্পটি বিক্রি করেন। দুই মাস আগে সাব-ঠিকাদার আবুশামা প্রকল্পটির কাজ শুরু করেন। ২৪জুলাই২৪ হতে ৩০ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার শর্ত থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৫ শতাংশ কাজ করেই প্রকল্পটি থেমে যায়। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির খোয়া ও পিচ উঠে গর্ত এবং খানা-খন্দে ভরপুর হয়ে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কাজ শুরুর পর আবার সড়ক খুঁড়ে রেখে সাব-বেজ ও পুরাতন ইট-পাথর উল্টে রাখার কারণে সড়কটি এখন পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ওই সড়কের পাশের চাকিরপশার তালুক গ্রামের আশরাফুল আলম বলেন, সড়কটির এমন অবস্থার কারণে অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসসহ কোন গাড়ি সঠিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরা অটো রিক্সায় কিংবা ভ্যানে করে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের দূর্ঘনা ঘটতে পারে সড়কটিতে। এতে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগী ও অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের চরম বিপদে পড়তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে মূল ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা জানান, কাজটি সাব-ঠিকাদার আবুশামাকে দেওয়া হয়েছিল। উপজেলা প্রকৌশলীর অহেতুক হয়রানির কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, মূল ঠিকাদার কাজটি দুইবার সাব-ঠিকাদারকে দিয়ে হাতবদল করায় মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আবুশামা কাজ শুরু করলে পোস্ট এবং কালভার্টগুলোতে নিম্নমানের কাজ করে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর ডিজাইন ও জয়েন্ট মোতাবেক কাজ সম্পন্ন করার কথা বললে তিনি কিছু না জানিয়েই কাজ বন্ধ করেছেন। সড়টির কাজ মাত্র ৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বার বার চিঠি দেয়ার পরও কোন উত্তর কিংবা কাজে হাত দেয়নি। মূলতঃ কাজটি নিয়েছে রংপুরের ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা। ব্যবস্থা নিলে তার বিরুদ্ধেই নিতে হবে। এরপর কোন উত্তর না এলে আমি ঠিকাদার বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতেহ বাধ্য হবো। কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রধান ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দিলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।