ঘূষ-দূর্নীতির আশ্রয় নিলে কঠোর হস্তে দমনের হুমকি: উপদেষ্টা আসিফ
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, বিকাল ৭:৫২ সময়
ঘূষ-দূর্নীতির আশ্রয় নিলে কঠোর হস্তে দমনের হুমকি: উপদেষ্টা আসিফ ঘূষ-দূর্নীতির আশ্রয় নিলে কঠোর হস্তে দমনের হুমকি: উপদেষ্টা আসিফ ঘূষ-দূর্নীতির আশ্রয় নিলে কঠোর হস্তে দমনের হুমকি: উপদেষ্টা আসিফ
অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, উত্তরাঞ্চলের জনমানুষের কল্যাণে নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার। এবিষয়ে উপদেষ্টামন্ডলীর পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিগত সরকারের সময়ে বন্ধ হওয়া সুগার মিলস গুলো চালু করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের উৎপাদি কৃষিপণ্য শতকরা ৯০ ভাগ দেশের চাহিদা পূরণে অবদান রাখছে। তাই কৃষি উৎপাদন তরান্বিত করার জন্য কৃষি বিপ্লব শিল্পকারখানা স্থাপন, চা শিল্পের সিন্ডিকেট দূর করে চাষীদের ন্যায্যমূল নির্ধারণেও স্থানীয় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশে কক্সবাজার সহ দেশের কয়েকটি জেলায় শুধুমাত্র পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। ইতোমধ্যে পঞ্চগড় জেলা ও কক্সবাজার জেলাকে মানুষ ইতোমধ্যে ভ্রমন পিপাষুদের কাছে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া আসার পথে উপর থেকে দেখছিলাম তেঁতুলিয়া অনেক সুন্দর এবং সুবজে সমারোহ চা বাগানে পরিপূর্ণ তাই পঞ্চগড়ের পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করার সুযোগ আছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত দিকনির্দেশানুয়ারী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দূরত্ব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সর্বপোরি উত্তরাঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবী তিস্তাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার। ইতোমধ্যে তার যাবতীয় কার্যক্রম অগ্রগতি হয়েছে এবং তিস্তাপ্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে। তিনি বলেন, ৫ জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের পর বাংলাদেশে বিগত দিনের সকল বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যমুক্ত ও গণতান্ত্রিক উন্নয়নের সমঅংশিদার। কারণ ইতোপূর্বে দেখেছি সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই সরকারের মন্ত্রী ও এমপির এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু বর্তমান অন্তবর্তকালীন সরকার সেই তথাকথিত নিয়ম ভেঙ্গে যেসব এলাকায় এখনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি সেখানে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর নানামুখী উন্নয়নে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এজন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের আরও সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং আগামী জানুয়ারী মাসে শুরু হওয়া তারুণ্যের উৎসবে সবাইকে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করবেন। আজ বুধবার দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। পঞ্চহগ জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, খেলা ধুলাকে প্রান্তিক পর্য়ায়ে পৌছে দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। উপজেলাভিত্তিক আউটডোর ও ইনডোর স্টোডিয়াম নির্মাণ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের খেলা-ধূলা ও মেধা বিকাশে লাইব্রেরী স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তাই সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ভাইদের পড়া শোনায় মনোযোগী হওয়ার সহ মাদক দ্রব্য সহ অন্যান্য খারাপ নেশায় না জড়িয়ে খেলা ধূলায় আরও মনোযোগী হওয়ার আহবান করেন। তিনি উপজেলা পরিষদে খেলা ধূলার উন্নয়নে ৫০ লাখ টাকা অনুদান বরাদ্দের ঘোষণা দেন। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপদেষ্টা হুয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহিদ ভাই ও আহতদের প্রাণের দাবী ছিল বৈষম্যহীন ও ঘুষ-দূর্নীতিমুক্ত সমাজগঠন গণতান্ত্রিক জনকল্যাণমূলক বাংলাদেশ গড়ার। তাই সরকারি অফিস আদালতে যদি কোন কাজকর্মে কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ঘুষ দাবী করেন, অন্যায় অবিচার করেন এবং জনগণকে প্রকৃত জনসেবা প্রদানে কোন রকম দলবাজি, চাঁদাবাজি ও হয়রানি করেন এজন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সহ মন্ত্রণালয়কে জানালে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এজন্য তিনি সর্বসাধারণকে সজাগ হওয়ার আহবান করেন। তেঁতুলিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি মো. মাহবুবুল আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফজলে রাব্বি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মো. সারজিস আলম, সাধারণ সম্পাদক জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ও সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি পঞ্চগড় জেলা শাখার আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত এস এম শফিকুল ইসলাম, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, ২নং তিরনইহাট ইউ’পি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন, পঞ্চগড় জেলা ছাত্র সমন্বয়ক মোকাদেসুর রহমান সান প্রমুখ। এসময় ১৮ বিজিবি, পঞ্চগড় ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মনিরুল ইসলাম পিএসসি, এলজিইডি পঞ্চগড় সিনিয়র সহকারি প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন, তেঁতুলিয়া স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌস, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ আল আমিন, তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েত কবির সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। শেষ প্রধান অতিথি ২ হাজার ৮ জর শীতার্ত ব্যক্তির মাঝে কম্বল এবং নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে ১৯টি বাইসাইকেল এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ব্যাগ বিতরণ করেন। পরে উপজেলা পরিষদের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিদর্শন শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।