তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার ১০টিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) বিকেলে লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।তিনি বলেন, গত দু’দিনের টানা বন্যায় জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার ১০টিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। অন্য দুইটি বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পানি না ওঠায় পাঠদান স্বাভাবিক ছিল। তবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল। বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বেশ কিছু বিদ্যালয় সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়। বন্যার অবনতি না হওয়া পর্যন্ত ১০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বন্যাকালীণ সময় নিরাপদে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পানিবন্দি ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সাতটি আদিতমারী উপজেলায় এবং বাকি পাঁচটি সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে।মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) বিকেল ৬টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭০ মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০মিটার) বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।এর আগে সোমবার (১ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুরে বিপৎসীমা অতিক্রম করে রাতে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহ হয়। মঙ্গলবার সকালে কিছুটা কমলেও দিনভর বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকেলে আরও কমে বিকেল ৬টায় বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।টানা দু’দিন তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার প্রায় লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ফলে চরম আতঙ্কের রয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করায় ভাটিতে থাকা নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এ পয়েন্টে তিস্তার পানি টানা প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সোমবার রাতের তুলনায় মঙ্গলবার কিছুটা কমেছে। মঙ্গরবার দুপুরে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে হলেও বিকেলে পানি কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।