1. [email protected] : Live Rangpur :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

সৈয়দপুরে পুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন

  • Update Time : বুধবার, ২২ জুন, ২০২২
  • ২৬৭ Time View
সৈয়দপুরে পুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন
সৈয়দপুরে পুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন

আবারও সুখবর দিল বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীরা দেশে প্রথমবারের মতো নারিকেলি চেলা ও তিতপুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবনে সফলতা পেয়েছেন। মিঠা পানির বিপন্ন প্রজাতির এই মাছ দুটির কৃত্রিম প্রজননের এ সফলতা তাঁরা পান চলতি বছরের মে মাসে। গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়।

ইনস্টিটিউটের নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে স্বাদু পানি উপকেন্দ্র থেকে নারিকেলি চেলা এবং ময়মনসিংহে স্বাদু পানি কেন্দ্র থেকে তিত পুঁটি মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করা হয়। মাছ দুটি নিয়ে অধিকতর গবেষণা চলমান।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, তিতপুঁটি একসময় দেশের নদীনালা, খাল-বিল, হাওর, বাঁওড় ও পুকুরে ব্যাপকভাবে পাওয়া যেত। তিতপুঁটি মাছের চচ্চড়ি দিয়ে রসনাপূজা হতো। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে তিতপুঁটির দেখা মেলে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংস্থার (আইইউসিএন) তথ্য অনুযায়ী মাছটি বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় রয়েছে। তিতপুঁটির শরীর রুপালি রঙের, বক্ষ পাখনার ওপরে একটি এবং পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় একটি গোলাকার কালো ফোঁটা রয়েছে। এ মাছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান এবং অন্যান্য অনুপুষ্টি পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে, যা মানবদেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করে। মাছটি অ্যাকোয়ারিয়ামে বাহারি মাছ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া সিদল ও শুঁটকি তৈরিতেও তিতপুঁটি প্রচুর ব্যবহৃত হয়।

তিতপুঁটি মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ২০২১ সালে ময়মনসিংহের স্বাদু পানি কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের হাওর এবং ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সংগ্রহ করে কেন্দ্রের পুকুরে গবেষণা শুরু করেন। চলতি বছরের মে মাসে দেশে প্রথমবারের মতো কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে তিতপুঁটি মাছের পোনা উৎপাদনে প্রাথমিক সফলতা অর্জিত হয়। তিতপুঁটি মাছের গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অনুরাধা ভদ্র, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিনা ইয়াসমিন ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহীন আলম।

এদিকে নারিকেলি চেলা অঞ্চলভেদে কাটারি ও নারকালি চেলা নামে পরিচিত। মাছটি নদী, পুকুর, বিল, হ্রদ ও খালের তলদেশে থাকে। সুস্বাদু হওয়ায় উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছটি খুবই জনপ্রিয়। মাছটিতে মানবদেহের জন্য উপকারী অনুপুষ্টি উপাদান ভিটামিন ‘এ’ ও জিংক রয়েছে। এ মাছের প্রাচুর্য ব্যাপকভাবে কমেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রজাতিটিকে রক্ষায় ইনস্টিটিউটের স্বাদু পানি উপকেন্দ্র সৈয়দপুরের বিজ্ঞানীরা ২০২১ সালে গবেষণা শুরু করেন। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও চিকলী নদী থেকে পাঁচ-সাত গ্রাম ওজনের নারিকেলি চেলা মাছ সংগ্রহ করে উপকেন্দ্রের পুকুরে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেন। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা দেশে প্রথমবারের মতো মাছটির কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে প্রাথমিক সফলতা অর্জন করেন।

চেলা মাছের প্রজনন গবেষণায় ছিলেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খোন্দকার রশীদুল হাসান, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক হায়দার, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাশরিফ মাহমুদ মিনহাজ ও শ্রীবাস কুমার সাহা।

এ প্রসঙ্গে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, ইনস্টিটিউট থেকে গবেষণা করে দেশে বিপন্ন ৬৪ প্রজাতির মাছের মধ্যে নারিকেলি চেলা, তিতপুঁটিসহ মোট ৩৬ প্রজাতির কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। অবশিষ্ট দেশীয় বিপন্ন মাছও পর্যায়ক্রমে গবেষণার আওতায় আনা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © Rangpur24.com 0176414680 [email protected]