রংপুর সিটি করপোরেশনে (রসিক) আওয়ামী লীগপন্থী কয়েকজন কাউন্সিলর লাঞ্ছিত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রসিকের মাসিক সভা শেষে ফেরার পথে তারা বিক্ষুদ্ধ জনতার হাতে লাঞ্ছিত হন।
বিক্ষুদ্ধ জনতা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রসিকের আওয়ামী লীগপন্থী কাউন্সিলরা দলীয় সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ তাদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। ভিডিও ফুটেজ দেখে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরদের সনাক্ত করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সেইসব কাউন্সিলরদের অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছেন। সেই ক্ষোভ থেকেই বিক্ষুদ্ধরা আওয়ামী লীগপন্থী কাউন্সিলরদের প্রতি বিরুপ আচরণ করেছেন।
রসিক সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ১১টি মহিলা ওয়ার্ডসহ মোট ৪৪ জন কাউন্সিলর রয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন কাউন্সিলর রয়েছে ১৯ জন। মঙ্গলবার মাসিক সভায় এদের মধ্যে ৬ কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।
রসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহমুদুর রহমান টিটু বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগপন্থী কিছু কাউন্সিলদের বিরেুদ্ধে সরাসরি সহিংস ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছে। যারা মাসিক সভায় ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে তেমন জোরালো কোন অভিযোগ নেই।
এদিকে, মাসিক সভা শেষে যাওয়ার সময় সিটি করপোরেশনে কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষুদ্ধ জনতা আওয়ামী লীগপন্থী ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল আলমসহ দুজনকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় খবর পেয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহাবুবার রহমান মঞ্জু ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড নুরুন্নবী ফুলু ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে তাদের ছাড়িয়ে নেন।
প্যানেল মেয়র মাহাবুবার রহমান মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগপন্থী কাউন্সিলরদের দেখে কিছু বিক্ষুদ্ধ মানুষ উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলো। পওর সকলকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি হয়ে গত ৪ আগস্ট প্রকাশ্যে গুলি ছুড়েন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের পরশুরাম থানা সভাপতি ও রসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা। ওইদিনের সংঘর্ষে হারাধন রায়সহ ৫ জন নিহত হন। এর পরদিন ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে রংপুর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলররা গা-ঢাকা দেয়ার ব্যবহ হচ্ছে নাগরিক সেবা। এতে সেবাগ্রহিতাদের মধ্যে হতাশার সঙ্গে বাড়ছে ক্ষোভ।