দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা গ্রামের সমতল ভূমিতে চা বাগান করে চমক দেখিয়েছেন র্যাবেন গ্রুপের পরিচালক এম আতিকুর রহমান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দুটি ইউনিয়নে প্রায় ১২ একর জমিতে চা চাষ হচ্ছে। সুগন্ধি ধান-লিচুর জন্য এ উপজেলার নাম ডাক থাকলেও এখন চা পাতার ফলন বেশ ভালো হচ্ছে। চা বাগানগুলোতে স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকেরা বেশি কাজ করছে। আগে এখানকার নারীরা ঘর-সংসার সামলাতো। এখন ঘর-সংসারের পাশাপাশি চা বাগানে কাজ করে পুরুষের সঙ্গে নারীরাও সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।
বাগানের ম্যানেজার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত আড়াই বছর আগে পঞ্চগড় থেকে চা গাছের চারা এনে নিজস্ব জমিতে পরীক্ষামূলক রোপন করেন।
গানে কাজ করে মজুরি টা একটু কম হয়ে যায়। বাগান মালিক যদি আমাদের মজুরিটা বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। কারণ বাজারে সব জিনিসের দাম অনেক চড়া।
চা শ্রমিক অনিকা রায় বলেন, চা বাগানটি বাসার কাছে হওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। আগে বাসায় বসে থাকতাম কোনো কাজ করতাম না। এখন বাসার কাছে চা বাগান হওয়ায় এখানে কাজ করে সংসারে কাজে লাগাতে পারছি। বাচ্চাদের লেখা-পড়ার খরচ দিতে পারছি। তবে নারী শ্রমিকদের মজুরিটা কম হয়েছে। আমরা চাই আমাদের দিন মজুরিটা আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়া হোক।
চা শ্রমিক লতা রানি বলেন, আগে কৃষি জমিতে কাজ করতাম। বাসা থেকে আমার স্বামী কাজে যেতে নিষেধ করতো। এখন আমার স্বামীসহ দুজনে মরিয়ম টি বাগানে কাজ করি। কৃষি কাজ তো সবসময় থাকে না। আগে কাজ না থাকলে বাসায় বসে থাকতে হতো। এখন বাড়ির সাথে চা বাগান হওয়ায় দুজনে মিলে চা বাগানে কাজ করে আমাদের সংসারে অভাব দূর হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে চা বাগান করে স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে আমরা এখানে চায়ের ফ্যাক্টরি বানাবো খুব দ্রুত এবং মরিময় টি বাগানের চা বাহিরের দেশে রপ্তানি করব।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, চিরিরবন্দরের কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে চা চাষ। আমাদের উপজেলার সাতনালা ও ফতেজংপুর দুটি ইউনিয়নে প্রায় ১২ একর জমিতে চায়ের চাষ হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চা চাষিদের। এবছর প্রথম আজ থেকে পাতা তোলার কাজ শুরু হয়েছে, পাতার ফলন বেশ ভালো হয়েছে।