দিনাজপুর: মাঠভর্তি দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। দোকানে দোকানে ঘুরে পছন্দের জিনিসপত্র কিনছেন ক্রেতারা।জমজমাট এমন মেলায় শুধু নারী দর্শনার্থীদের উপস্থিতি, ক্রেতারাও কেবল নারী। মেলায় প্রবেশের অনুমতি নেই পুরুষের। এমন দৃশ্যের দেখা মেলে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অনুষ্ঠিত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বউমেলায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সনাতন ধর্মালম্বীদের লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর পূজামণ্ডপ চত্বরে দিনব্যাপী এই বউমেলার আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর লক্ষ্মীপূজার পরদিনই বউমেলা আয়োজিত হয়।
মেলায় পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ থাকলেও মেলার প্রবেশদ্বারে তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। মেয়ে, স্ত্রী কিংবা পরিবারের অন্যান্য নারী সদস্যদের নিয়ে মেলায় আসেন তারা। মেলার প্রবেশদ্বারের কাছে ভিড় জমান দূরদূরান্ত থেকে আসা পুরুষেরা। অপেক্ষা করেন মেলার ভেতরে থাকা পরিবারের নারী সদস্যদের জন্য।
ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়ন থেকে আসা প্রিতম চন্দ্র রায় বলেন, স্ত্রী আর ছোট বোনকে নিয়ে মেলা দেখতে এসেছি। ভেতরে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। তাই প্রবেশ পথের কাছে অপেক্ষা করছি। এটা অনেক ভালো বিষয়, নারীদের নিরাপত্তার দিক থেকে। যেহেতু সব দর্শনার্থী বা ক্রেতা নারী তাই বাড়তি টেনশন নেই। এটা আসলেই ব্যতিক্রমধর্মী একটা উদ্যোগ।
মেলায় আসা স্বপ্না রানী রায় বলেন, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে প্রতিবারই এই মেলায় আসার চেষ্টা করি। দীর্ঘদিন ধরে এই মেলা চলে আসছে, যা বউমেলা হিসেবে পরিচিত। শুধু নারীরা এখানে প্রবেশ করতে পারেন। এই মেলায় ক্রেতা শুধুই নারী। তবে নারী বিক্রেতার পাশাপাশি পুরুষ বিক্রেতারাও থাকেন। বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র কিনতে পারি এখান থেকে। সব মিলিয়ে অনেক ভালো লাগছে মেলায় আসতে পেরে।
মেলার আয়োজক সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অশেষ রঞ্জন দাস বলেন, মেলাটি তৎকালীন জমিদার বিমল বাবু শুরু করেন। জমিদার সপরিবারে ভারতে চলে গেলেও ঐতিহ্যবাহী বউমেলা সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে প্রতি বছর হয়ে আসছে। মেলাটি শুধু নারীদের জন্যই। তাই মেলায় পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ থাকে। লক্ষ্মী পূজার পরের দিন এই বেউমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।