স্টাফ রিপোর্টার : গুনগত শিক্ষা বা মানসম্মত শিক্ষা বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত হবে সে জাতি তত বেশি উন্নত হবে । তাই রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কতটুকু উন্নয়নের পথে ধাবিত হবে তা বোঝা যায় শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকল্পনার ভেতর দিয়ে। বর্তমানে বহুল উচ্চারিত শব্দ হলো ‘‘মানসম্মত ও গুনগত শিক্ষা ” তাই শিক্ষার মান উন্নয়ন প্রয়োজন। যদি শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়ন দ্রুত গতিতে হবে । মানসম্মত শিক্ষা পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় প্রত্যাশার আলোকে গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে মানসম্মত শিক্ষা বলতে ঐ ধরনের শিক্ষা কর্মসূচিকে বোঝানো হয়েছে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অর্জিত জ্ঞান বাস্তবতার নিরিখে কাজে লাগিয়ে উর্দ্ধমুখী জীবনযাপন ও অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ লাভ করতে পারে । বর্তমানের প্রেক্ষিতে মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন কেননা এটি শিক্ষার গুণগত মান ঠিক রাখে ও শিক্ষাব্যবস্থায় প্রগতিশীলতা আনে।
শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করণে সরকারের কতগুলো পদক্ষেপ রয়েছে। এর মধ্যে হলো বছরের প্রথম দিনে সকল শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া সরকারের একটি বড় সাফল্য। প্রাথমিক শিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই ছেলে ও মেয়েদের প্রবেশ গামিতা নিশ্চিত করে প্রযুক্তিগত, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষার বৈষম্য দূর করে । এছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বহু আগে থেকেই ছয় বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য অনানুষ্ঠানিক শিশু শ্রেণী অন্তভর্’ক্ত রয়েছে। আগামী ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ হতে ৪+ বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাক প্রাথমিক (১ম বর্ষ) এবং ৫+ বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাক প্রাথমিক (২য় বর্ষ) শ্রেণীতে ভর্তি করা হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণী অন্তর্ভুক্তির উদ্দেশ্য হলো শিশুদের স্কুল পরিবেশে অভ্যস্ত করে তোলা, যাতে তারা পরবর্তীতে স্কুল ছেড়ে না দেয়। ২০০৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল সময়ের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষায় মোট অন্তর্ভুক্তির হার ( জি ই আর ) প্রায় তিন গুণ বেড়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করনে সরকারী ভাবে গৃহীত কিছু পদক্ষেপ নি¤œরূপ- প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক উন্নয়নের জন্য অপুষ্টিজনিত সমস্যাগুলোর সমাধানে সরকারী ও এনজিও সমম্বয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।
অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে শ্রেনিকক্ষের ব্যবস্থা করে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরবরাহ করে শিশুদের স্বাস্থ্যসম¥ত বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিক্ষকগগণকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষকে পরিনত করা হচ্ছে। সহজ উপায়ে শিশুর শিখনের জন্য শ্রেনিতে পর্যাপ্ত উপকরণ ব্যবহারের বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। শ্রেনিপাঠে প্রদর্শনের জন্য ল্যাপ্টপ ও মািল্টমিডিয়া প্রদান করে শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক গোষ্ঠী অ ল, জাতি ও স্বাস্থ্যগত অবস্থানের সব স্কুল বয়সী শিশুর জন্য স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হচ্ছে। সরকারীভাবে গৃহীত পদক্ষেপ সঠিক বাস্তবায়ণের মাধ্যমে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন তরাম্বিত হবে আশা করা যায়।## মোঃ জাহিদ হোসেন
সহকারী ইন্সট্রাক্টর
উপজেলা রিসোর্স সেন্টার
আদিতমারী, লালমনিরহাট