শেখ হাসিনার পরিণতি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, এখন থেকে আগত এবং অনাগত যারা আছে শেখ হাসিনার পরিণতি থেকে আমাদের যেন শিক্ষা হয়। জাতির সেবক হয়ে এসে মালিক বনে গেলে কী শিক্ষা হয় তা আমরা দেখেছি।
শুক্রবার গাজীপুর মহানগরীর রাজবাড়ী মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি জামায়াত আমীর বলেন, ‘আমরা জানিয়ে দেব এখন থেকে বাংলাদেশের মানুষ সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলবে। আমরা চাই এমন একটি দেশ হবে যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা কোনো সাধারণ শ্রমিককে অবহেলা করব না। আমাদের দেশে মতলববাজরা মালিক এবং শ্রমিকের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে রাখে। শিল্প যদি না বাঁচে তাহলে শ্রমিকের কর্মসংস্থান কোথায় হবে। যারা এই সমাজের দুশমন তারাই শিল্পকে ধ্বংস করতে চায়। তারা শ্রমিকদের আবেগকে উসকে দিয়ে রাস্তায় নামায়। রাস্তায় মরে শ্রমিকরা, বেনিফিট নেয় ঘরে বসে মতলববাজরা। আমরা চাই দেশের শিল্প বাঁচুক শ্রমিকও বাঁচুক। আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে শিক্ষিত মানুষ কলমের খোঁচায় হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করবে না।’
তিনি বলেন, ‘যারা জনগণের টাকায় অস্ত্র-গুলি কিনে আবার তা জনগণের ওপর প্রয়োগ করবে এমন কোনো সরকার আমরা দেখতে চাই না। তার জন্য আমাদের দেশের ১৮ কোটি মানুষের হাত একত্রিত করতে হবে। বিশ্বকে জানান দিতে হবে দেশ ও জাতির স্বার্থে আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। আর আমরা কাউকে, কোনো জাতিকে বিভক্ত করার সুযোগ দেব না। দলের ভিত্তিতে, জাতির ভিত্তিতে, গোষ্ঠীর ভিত্তিতে আর আমরা কাউকে বিভক্তির সুযোগ দেব না। জাতিকে তারাই ভাগ করে যারা জাতির দুশমন। আমরা মতলববাজদের বলে দিতে চাই, অতীতে তোমরা যা করেছ, আগামীতে তোমাদের আর তা করতে দেব না।
পাশাপাশি তিনি বলেন, দেশের এত পরিবর্তন এরপরও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে কেউ বলতে পারবে না কাউকে নির্যাতন করা হয়েছে, কারও কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে, কারও ইজ্জতে টান দেওয়া হয়েছে, তখন থেকে শুরু করে কোনো ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা হয়েছে, হুমকি দিয়েছে। আল্লাহর মেহেরবানি আমাদের কোনো নেতাকর্মী এমনটা করেনি। আমরা দফায় দফায় আন্দোলন করেছি, তবে স্বৈরাচার হঠাতে পারিনি, আল্লাহ ২০২৪ সালে এসে আমাদের সফল করেছেন। আর এ কাজটা সম্পন্ন হয়েছে আমাদের যুবসমাজ তরুণদের জন্য। আবু সাঈদ, মুগ্ধ যারা জীবন দিয়েছে তাদের জন্যে। যারা এই জাতির ওপর জুলুম করেছেন তাদের সবার বিচার চাই। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের একজনকে যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরি দেওয়া হোক এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরও চাকরির ব্যবস্থা করা হোক। আমরা আশা করব, সরকার আমাদের দাবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা অঞ্চল উত্তর টিম সদস্য আবুল হাশেম খান, গাজীপুর জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর নায়েবে আমির মুহাম্মদ খায়রুল হাসান, গাজীপুর মহানগর সেক্রেটারি আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, গাজীপুর মহানগর প্রচার সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সালাহউদ্দিন আইউবী।