জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তিচায় রংপুরবাসী

জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তিচায় রংপুরবাসী

জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তিচায় রংপুরবাসী
জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তিচায় রংপুরবাসী

জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তিচায় রংপুরবাসী
নগরীর ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডসহ অনির্ধারিত বাস স্ট্যান্ডগুলি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে স্থানান্তরের দাবী নগরবাসির
স্টাফ রিপোটার ॥॥
রংপুর বিভাগের প্রাণ কেন্দ্র রংপুর মহানগর এখন একটি ব্যস্ততম তিলোত্তমা নগরীতে পরিনত হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, রংপুর মেডিকেল কলেজ, জিলা স্কুল, সরকারী বালিকা বিদ্যালয়সহ অসংখ্য সরকারি-বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ গুলি রংপুর নগরীকে শিক্ষা নগরীতে পরিণত করেছে। আবার বিনোদন কেন্দ্র রংপুর চিড়িয়াখানা, চিকলী পার্ক, চিকলী ওয়াটার পার্ক, তাজহাট জমিদার বাড়ি জাদুঘর, বেগম রোকেয়ার জন্ম ভূমি, ভিন্ন জগৎ রংপুরের গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আগমনে রংপুর এখন ব্যস্ততম নগরীতে পরিণত হয়েছে। অভ্যন্তরীন রুটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরের পরে দ্বিতীয় অবস্থানে সৈয়দপুর বিমান বন্দর। পর্যটন কর্পোরেশনের পাশাপাশি নগরীতে গড়ে উঠেছে তারকামানের অনেক আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরা। রংপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ছয় লেন মহাসড়কের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এবং আশা করা যায় দ্রুত এর কাজ সম্পন্ন হবে। ফলে রংপুর থেকে ঢাকা সড়ক পথে মাত্র ৫-৬ ঘন্টায় যাতায়াত করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে, বাস কোম্পানীগুলো স্লীপার কোচসহ অত্যন্ত আধুনিক এসি কোচ সার্ভিস চালু করেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় বর্তমান নগরীর কামারপাড়া ঢাকা কোচ ষ্ট্যান্ডটি একটি অনুন্নত কোচ ষ্ট্যান্ড। একটি বিভাগীয় শহরের ঢাকা কোচ ষ্ট্যান্ড যেখানে নাই কোন যাত্রী বিশ্রামাগার, পর্যাপ্ত ওয়াশ সুবিধা, নামাজের স্থাান, আবাসিক হোটেল, রেষ্টুরেন্ট ও পার্কিং সুবিধা। বাস গুলোকে যত্রতত্র রাখা হয় শাপলা থেকে টার্মিনাল ও সেনপাড়া রোডে। ফলে সংকীর্ণ রাস্তায় সার্বক্ষনিক লেগেই থাকে যানজট। ফলে সাধারণ পরিবহন ও যাত্রীদের চলাচলে পোহাতে হয় নানা দূর্ভোগে। কোচ ষ্ট্যান্ডটি অল্প জায়গায় হওয়ায় যাত্রীদের বাসে উঠা নামাতেও পরতে হয় চরম ভোগান্তিতে। কোচ ষ্ট্যান্ডসংলগ্ন নেই কোন আবাসিক হোটেল, দূরের যাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। সম্প্রতি রংপুর সিটি কর্পোরেশন দাতা সংস্থা জাইকা-এর অর্থায়নে একটি বিশাল আয়তনের দৃষ্টিনন্দন ও আধুুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে আছে যাত্রীদের বিশাল বিশ্রামাগার, পর্যাপ্ত ওয়াশ সুবিধা, পুরুষ-মহিলাদের পৃথক নামাজের স্থান, রেষ্টুরেন্ট-ফাষ্ট ফুডের দোকান, ওষুধের ফার্মেসিসহ সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। আছে আবাসিক হোটেল, সন্নিকটে পর্যটন মোটেল, পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং ও উপজেলা পর্যায়ে যোগাযোগের সহজ ব্যবস্থাা। কেন্দ্রীয় টার্মিনালের কাছে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, পেট্রোলপাম্প, দৃষ্টিনন্দন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল জামে মসজিদ, ব্যাংক ও ব্যাংক বুথসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় মধ্যরাত পর্যন্ত টার্মিনাল এলাকায় জনসমাগম থাকে। ঢাকা থেকে আসা কোচগুলো শেরপুর ফুড ভিলেজে যাত্রা বিরতি দেয়ার পরে আর কোথাও যাত্রা বিরতি দিতে পারেনা। ফলে রংপুর বিভাগের জেলার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানের যাত্রীদের দীর্ঘ সময় যাত্রা করতে হয়। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকা কোচ ষ্ট্যান্ড চালু হলে সেখানে যাত্রা বিরতি দিতে পারলে উপকৃত হবে যাত্রীরা। তাই যাত্রীদের দূর্ভোগ লাঘবে এবং রংপুর মহানগরীর সুনাম বৃদ্ধিতে দ্রুত কামারপাড়া কোচ ষ্ট্যান্ডটি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে স্থানান্তর করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
বরিশাল থেকে আসা যাত্রী জামাল হোসেন বলেন, কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে যাত্রী সেবার নেই কোন ব্যবস্থা। রাত্রী কালিন যাত্রীদের নিরাপত্ত্বাহীনতায় পরতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন জানান, স্কুল কলেজের সময় এমনকি রাত্রি পর্যন্ত সার্বক্ষণিক কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড এলাকায় চরম যানজটে পড়তে হয়। যানজটের কারণে গত পবিত্র মাহে রমজানে অনেক পথচারী ও যাত্রীদের রাস্তার মধ্যে ইফতার করতে হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডটি রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে স্থানান্তর করা জরুরি বলে মনে করছেন তিনি।
ঢাকা থেকে আসা অপর এক যাত্রী টিটু জানান, আমি ভোরে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে নেমেছি। কিন্তু নিরাপত্ত্বার অভাবে আমাকে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। রিক্সা চালক শ্যামল জানান, রাতে যাত্রীদের নিয়ে আতংকে থাকতে হয়। বিশেষ করে স্টেশন রোড নুরপুর গলি, সেন্ট্রাল রোড ভুমি অফিস, ইঞ্জিনিয়ার ব্রীজ, দেওযান বাড়ী ব্রীজ, হনুমানতলা, মাষ্টার পাড়া, দখিগঞ্জ শ্মশান, মুন্সিপাড়া কবরস্থানসহ নগরীর বিভিন্ন পযেন্টে রাতে রিক্সায় যাত্রী নিয়ে গেলে ছিনতাইকারীদের থাকতে হয়। কখন কোন দিক থেকে ছিনতাইকারিরা এসে সর্বোচ্চ কেরে নিয়ে ক্ষপ্পরে পরতে হয়। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে, বিশেষ করে দুরপাল্লার যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়া হোক।
এই বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক, সিটি কর্পোরেশন, মটর মালিক সমিতি এবং রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুশিল সমাজের প্রতিনিধি অধ্যক্ষ মোঃ ফখরুল আনাম বেঞ্জ জানান, রংপুরের সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে কামারপাড়া কোচ ষ্ট্যান্ডটিসহ কলেজ রোড অবস্থিত কুড়িগ্রাম বাসষ্ট্যান্ড এবং সকল অনির্ধারিত বাস ষ্ট্যান্ডগুলো কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে স্থানান্তর করার জন্য জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তি দাবী জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Comments are closed.

© All rights reserved © Rangpur24.com
Desing & Developed BY NewsSKy