গাছ কাটার তদন্তে নেমেছেন তদন্ত কর্মকর্তা
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যের নামে ব্যক্তি মালিকানাধীন
শতাধিক গাছ জোর করে কেটে নেওয়ার অভিযোগে তদন্তে নেমেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
সোমবার (৬ জুন) দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা
সমাজসেবা অফিসার রওশন আলী মণ্ডল।
এ সময় তদন্ত কর্মকর্তাকে জবানবন্দি দিতে গিয়ে আবেগে চোখের পানি ধরে রাখতে
পারেননি ক্ষতিগ্রস্তরা। সন্তানের মতো বড় করা গাছগুলো চোখের সামনে কেটে নিয়েছে ইউপি
সদস্য ও গ্রাম পুলিশ। যা ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকারদের দস্যুবৃত্তিকেও হার
মানিয়েছে।অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের সেনপাড়া হলমোড় থেকে
দক্ষিণে শ্মশানে যাওয়ার একটি কাঁচা রাস্তা রয়েছে।সেই রাস্তার দুই পাশের জমির মালিকেরা
দীর্ঘদিন আগে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ লাগান। সাম্প্রতিক সময়ে রাস্তাটি
দেওয়া হয়।প্রকল্পটির সভাপতি ওই ভাদাই ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ড সদস্য
লালন মিয়া।গত বুধবার (২৫ মে) সকালে ইউপি সদস্য লালন মিয়া হঠাৎ গ্রাম পুলিশ নিয়ে
এসে ওই রাস্তার দুই পাশের শতাধিক গাছ কেটে নিয়ে যান।রাস্তার পাশে এসব গাছ সরকারি
দাবি করে তারা কেটে নেন। বিষয়টি নিয়ে কাউকে জানালে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি ছাড়া করার
হুমকি দেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।তদন্ত কর্মকর্তার সামনে জবানবন্দি দিতে
অনেকেই আবেগে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। সন্তানের মত বড় করা ফলভর্তি
এসব গাছ চোখের সামনে কেটে নিয়ে যান ইউপি সদস্য লালন মিয়া। প্রতিবাদ করায় তাদের
ভিটেমাটি ছাড়া করারও হুমকি দিয়েছেন। এ লুণ্ঠনকে ৭১ সালের রাজাকারের লুণ্ঠনকে হার
মানিয়েছে বলেও ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ন্যায় বিচার দাবি করেন
তারা।ক্ষতিগ্রস্ত কলেজ শিক্ষক জগবন্ধু রায় বলেন, বহু বছর আগে লাগানো গাছগুলো হঠাৎ
ইউপি সদস্য লালন মিয়া গ্রাম পুলিশ নিয়ে এসে কেটে নিয়ে যায়। গাছগুলো রাস্তার জমিতে
পড়েছে দাবি করে কেটে নেয় তারা। রাস্তার সীমানা নির্ধারণে জমি পরিমাপ করতে একটু
সময় চেয়েছি। কিন্তু তারা মানেনি। চোখের সামনে ফলসহ সবগুলো গাছ কেটে নিয়ে গেছে।
তাদের এ লুণ্ঠন ৭১ সালের রাজাকারদের লুণ্ঠনকেও হার মানিয়েছে। অভিযোগ দেয়ায়
আমাদের ভিটে মাটি ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন মেম্বর ও তার লোকেরা।আরেক ক্ষতিগ্রস্ত
ময়না রানী বলেন, আমার ১৩টি মোটা মোটা গাছ কেটে নিয়েছে। অনেক অনুরোধ করেও
বাঁচাতে পারিনি। গাছগুলোর বাজারে ৬৫-৭০ হাজার টাকা হবে। সবগুলো গাছ আদিতমারী
রেলগেটের করাত কলে রেখেছেন ইউপি সদস্য লালন মিয়া। তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা
সমাজসেবা অফিসার রওশন আলী মণ্ডল বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করতে নির্দেশনা পেয়েছি
। তাই সরেজমিনে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার বলেন,ঘটনাটি জেনে
তদন্ত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পৌঁছলে বিধিমত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাছ কাটার তদন্তে নেমেছেন তদন্ত কর্মকর্তা