রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিয়ার রহমান এক কর্মকর্তা এবং তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ১৮ আগস্ট (রবিবার) বিভাগে নিরাপদ ও সুষ্ঠ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষে গনিত বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব দাবি জানান।অভিযুক্ত ৫ জন হলেন গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো:মশিয়ার রহমান(মশিউর) সহকারী রেজিস্টার আনোয়ার হোসেন (মিঠু), ২০১৯-২০ সেশনের আবদুল্লাহ আল রায়হান ,২০২০-২১ সেশনের বায়েজিদ এবং ২০২১-২২ সেশনের আতিফ আসাব দিপ্র মন্ডল।
এসময় শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের কাছে ছয়টি দাবি জানান।১. অনতিবিলম্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলাকারী, বিরূপ মন্তব্যকারী অভিযুক্ত সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করতে হবে। ২. বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত কোন শিক্ষার্থীকে কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেউ অযথা হয়রানি করতে পারবে না এবং বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেউ সক্রিয় রাজনীতি করতে পারবে না।৩. বিভাগের বার্ষিক খেলাধুলা, পিকনিক, নবীন-বরন ও বিদায়, এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটি সহ অন্যান্য বিষয় পরিচালনা এবং ছাত্রদের উত্থাপিত নানান সমস্যা তুলে ধরার জন্য অনতিবিলম্বে বিভাগে নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র সংসদ গঠন করতে হবে।৪. বিভাগের সকল ব্যাচের ক্লাসের নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী পরিচালনা করতে হবে। কোন কারণে, সমস্যা হলে অবশ্যই স্যার নিজে ব্যাচ প্রতিনিধিদের সময় মতো অবগত করবে।
৫. একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সকল পরীক্ষা পরিচালনা করতে হবে এবং সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করতে হবে। এছাড়াও সকল ব্যাচের চলমান পরীক্ষাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে এবং সকল ব্যাচের পরবর্তী সেমিস্টার ডিসেম্বর এর মধ্যে শেষ করতে হবে। ৬. সেমিনার ফি, জরিমানা সহ স্টুডেন্ট কতৃক আদায়কৃত সকল টাকার আয় ব্যায়ের হিসাব ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন, বিভাগের নির্বাহী ক্ষমতা না থাকায় এক ও দুই নং নতুন ভিসি ও প্রশাসন আসলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকি দাবি গুলো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে মেনে নেওয়া হবে। আর অভিযুক্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আবু সাঈদ হত্যাকান্ডে জড়িতের বিষয়টি অস্বীকার করে বিভাগীয় প্রধান বরাবর পত্রের মাধ্যমে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন।
তাঁর অভিযোগের সারমর্ম হলো , সেসময় তার কোন স্বজন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্কের মোড়ে আটকা পড়েছিল। ১নং গেটের (আবু সাঈদ গেট)বাইরে গুলির শব্দ শুনে তিনি তাকে আনতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু গেটের সামনে পুলিশের সাথে দেখে কেউ তার ছবি তুলেছেন। এ বিষয়ে গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান কমলেশচন্দ্র রায় বলেন, আবু সাঈদ হত্যার সাথে জড়িত অভিযুক্তরা শাস্তি পাক এটা সবাই চায় কিন্তু নির্দোষ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না। তাই অভিযুক্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সাথে বসে শিক্ষার্থীদের আলোচনা করার পরামর্শ দেন তিনি ।
অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল রায়হান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কয়েকজন ছোট ভাই অতিউৎসাহী হয়ে সামনে (ক্যাম্পাসে) আগাই গেছিল। তাদের আনার জন্য আমার সামনে যাওয়া লাগছিল। যার কারণে আমাকে ছবি বা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমি কারো গায়ে হাতও তুলিনি, কাউকে মারিনি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বায়েজিদ, আতিফ আসাব দিপ্র মন্ডল ও শিক্ষক মশিয়ার রহমান কে বারবার ফোন করলেও ফোন কলে পাওয়া যায়নি।