কাহারোলে নেপিয়ার ঘাস চাষের চাহিদা বাড়ছে

কাহারোলে নেপিয়ার ঘাস চাষের চাহিদা বাড়ছে

কাহারোলে নেপিয়ার ঘাস চাষের চাহিদা বাড়ছে


এম.এ জলিল শাহ্-কাহারোল (দিনাজপুর) থেকে: দিনাজপুরের কাহারোলে ব্যাপকভাবে নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। নেপিয়ার ঘাস হল পূর্ব আফ্রিকার দুদ্ধ চাষিদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পশু খাদ্য। বিশেষ করে গরু ও মহিষের জন্য । এটির কোন বীজ হয় না। কাটিং রোপণ করতে হয়। এর এক একটি ঝোপা বিশাল বড় আকারের হয়ে থাকে। এটির চাষ করতে একটি কাটিং থেকে আরেকটির দূরত্ব দিতে হয় দুই ফিট পর পর। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ফসল কাটা যায়। প্রতি একরে ফলন হয়ে থাকে প্রায় ৬৫ টন পর্যন্ত। এ ঘাস এক প্রকার স্থায়ী ফসল। এটি দেখতে অনেকটা আখের মতো। লম্বায় প্রায় ৬ থেকে ১৩ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল সহজে জন্মে পুষ্টিকর সহজপ্রাচ্য ও খরা সহিষ্ণু। এ ঘাস একবার রোপণ তিন থেকে ৬ বছর পর্যন্ত এর ফলন পাওয়া যায়।এটির চাষ বলা চলে সারা বছর করা যায়। উচু,ঢালু, অনাবাদি জমি যেমন বাড়ির পাশে নদীর তীরে পুকুর পাড়ে রাস্তার ধারে এবং বেরীবাধ এলাকা ছাড়াও সমতল এটির চাষ হয়ে থাকে। পাশাপাশি এ খাদ্যের প্রচুর চাহিদা থাকায় এ ঘাস চাষে ঝুকি পড়েছে অনেকে। দিনাজপুর জেলায় প্রায় প্রত্যেক পরিবার পশু পালন করে থাকে। তার মধ্যে গরু পালনের পরিবার বেশী। কেউ কেউ এখন খামার করে গরু পালন করছে। এক একটি খামারে নি¤েœ ৫০ থেকে শতাধিকেরও বেশি গরু পালন করে থাকে। আগে গরুর খাদ্য ছিল ভূষি, চালের গুড়া, পাতারের ঘাস,খর, ভাতের মার, বাশের পাতা, ছোলাসহ আরও কিছু। বর্তমানে ্ওই সকল খাদ্যের দাম বেড়ে দ্বিগুন থেকে চারগুন হয়েছে। পাতারে এখন বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। ফলে কোন জমি আর অযথা পড়ে থাকে না। তাই ঘাস মেলে না। এখন যারা গরু ছাগল পালন করে থাকেন তারা নিজ বাসাতেই সেগুলোকে বড় করে তোলেন। গরু পালন করতে আর এখন আর রাখালের প্রয়োজন হয় না। তবে বাসায় গরু দেখাশুনার জন্য লোকের প্রয়োজন হয়। গবাদী পশু পালন বৃদ্ধি পাওয়ায় নেপিয়ার ঘাস এখন অন্যতম অর্থকারী ফসল হিসাবে পরিচিত পেয়েছে। লাভজনক হওয়ায় পশু পালনের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে নেপিয়ার ঘাস। গো-খামারে ব্যবহৃত ছোলা,ভুট্রা, গম,ভুসি, ফিড ও খড়ের দাম বৃদ্ধি হাওয়ায় প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকেরা শাক-সবজি চাষের পরিবর্তে এখন ঘাস চাষের দিকেই ঝুকছে বেশি। কারণ হিসাবে জানা গেছে ঘাস চাষে ব্যয় কম উৎপাদন হয় সারা বছর। অন্য ফসলের তুলনায় লাভ বেশী। কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের চাষি মোঃ আরিফুল জানান, তিনি ১৬ বছর থেকে এ ঘাসের চাষ করে আসছেন। এতে কোন লোকসান নেই বরং লাভের পরিমাণ তিনগুণ থাকে। বিক্রি করতেও তেমন অসুবিধা হয় না। কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউপির পরমেশ^রপুর গ্রামের চাষী মোঃ কামরুল হাসান জানান,তার ৫০ শতাংশ জমিতে তিনি ১৫ বছর থেকে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে আসছেন। এ বছর ৮ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ করেছেন। ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। তিনি ঘাস বিক্রি করবেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। রসুলপুর ইউনিয়নের হাসুয়া গ্রামের রাসেল রানা তার ৫০ শতাংশ জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। সুন্দরপুর ইউপির বোয়াল পাতমা গ্রামের মোঃ আলী হোসেন তার ৭২ শতাংশ জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। এতে তাদের লাভ প্রায় দ্বিগুন। পাইকারী এবং খুচরায় বিক্রি করেন। এমন কথা জানালেন আরেক চাষী কুতুবুল।কাহারোল উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ আবু সরফরাজ হোসেন জানান, এবার উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে উচু জমিতে নেপিয়ার ঘাস ভালো চাষ হয়েছে। দিন দিন এ ঘাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। খামারীদের কাছে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Comments are closed.

© All rights reserved © Rangpur24.com
Desing & Developed BY Rangpur24.com