৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার সকাল ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাব চত্তরে আলু চাষীদের বাঁচানোর দাবিতে এবং কোল্ডষ্টোর ভাড়া কমানোর দাবিতে রাস্তায় আলু ফেলে দিয়ে আলুচাষীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।আলুচাষী সংগ্রাম কমিটি,রংপুর এর জেলা আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আহসানুল আরেফিন তিতু, আলুচাষী জমশেদ আলী, রেজওয়ান শাহ,তছলিম উদ্দিন,রানা মিয়া, লক্ষীকান্ত রায়,মইনুল ইসলাম,নাসিরউদ্দিন প্রমূখ।নেতৃবৃন্দ বলেন আলু আমাদের প্রধান সবজি এবং অর্থকরী ফসল।বিশ্বব্যাপী আলুর চাহিদা ব্যাপক।উত্তরবঙ্গ বিশেষ করে রংপুরের জমি এবং আবহাওয়া আলু চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।ফলে এই অঞ্চলের কৃষকরা প্রচুর আলু উৎপাদন করে।কিন্তু আলুর বাম্পার ফলন হলেও কৃষক লাভের মুখ দেখতে পারে না।আলু যেহেতু পঁচনশীল সবজি,তাই কৃষক বেশিদিন আলু ঘরে রাখতে পারে না।দ্রুত তাকে আলু বিক্রি করতে হয়।এই সময়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আলুর বাজারে ধস নামিয়ে দেয় ।ফলে স্বাভাবিকভাবেই কৃষক কোল্ডষ্টোরে আলু রাখার চেষ্টা করে।কিন্তু আলুর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন কোম্পানি ষ্টোর মালিকদের সাথে যোগসাজশ করে ষ্টোরের বেশিরভাগ জায়গা আগেই বুকিং করে রাখে।ফলে কৃষকরা কোল্ডষ্টোরেও জায়গা পায়না। এভাবে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সাথে কোল্ডষ্টোর মালিকদের সিন্ডিকেট যুক্ত হয়ে কৃষককে পানির দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করে।এবারেও দাম কম থাকার কারণে কৃষক জমিতে আলু বেশিদিন রেখে পাকিয়ে বীজ করার চেষ্টা করছে।কিন্তু ষ্টোরের বেশিরভাগ জায়গা খাবার আলুর জন্য বুকিং থাকায় বীজ আলুও কৃষকরা রাখতে পারবে না।ফলে আগামী বছর বীজের ভীষণ সংকট তৈরি হবে।প্রশাসনের তদারকির অভাবে কোল্ড মালিকরা রাতারাতি আলুর ভাড়া দ্বিগুন করে দিয়েছে।গতবছর এক বস্তা আলুর ষ্টোর ভাড়া ছিলো ২৮০ টাকা, এএবারে একই পরিমাণ আলু রাখার জন্য ব্যয় করতে হবে ৫৬০ টাকা।দেখার কেউ নেই!
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ারা হোসেন বাবলু বলেন, আলুচাষী কৃষকদের রক্ষায়, কৃষি রক্ষায় আলুচাষী সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে ষ্টোর মালিক,আলুচাষী এবং জেলা প্রশাসনের একটি যৌথ মিটিংয়ের আয়োজন করার আহ্বান জানাই।এছাড়া নিম্নলিখিত দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
দাবিসমূহঃ
১.প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা বাতিল করে ১.৫০ টাকা নির্ধারণ কর।
২.অগ্রিম বুকিং এর নামে বস্তা প্রতি ১০০ টাকা আদায় বন্ধ কর।
৩.অবিলম্বে সরকারি উদ্যোগে প্রতি উপজেলায় বিশেষায়িত বীজ হিমাগার নির্মাণ কর।
৪.সকল হিমাগারে প্রকৃত কৃষকের জন্য ৬০ ভাগ জায়গা বরাদ্দ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৫.লাভজনক দামে আলু বিক্রি করতে না পারা কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৬.আলুচাষীদের আলু সরকারি উদ্যোগে বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করতে হবে।